খড়্গপুরে এক হোটেলে হানা দিয়ে চার মহিলাকে উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চার মহিলাকে অপহরণ করে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় ওই হোটেলের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এক বিজেপি নেতার। যা নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির দাবি, পুরো ঘটনাটাই চক্রান্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, খড়্গপুরের গোলাপী এলাকায় ওই হোটেলে অসাধু চক্র চলছে বলে অভিযোগ আসে। অভিযোগের জেরে বুধবার গভীর রাতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশিতে চার জন মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৪৩(৩) ধারায় মামলা রজু করেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা মারফত জানা গেছে, হোটেলটির মালিক স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা গোপালী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিমল দাস ওরফে টিঙ্কু। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরেই পলাতক ওই বিজেপি নেতা।
এদিকে এই মামলায় বিজেপি নেতার নাম জড়াতেই পদ্মশিবিরকে নিশানা করছে তৃণমূল। শাসক দলের দাবি, বিজেপির ওই নেতা দিলীপ ঘোষ এবং অগ্নিমিত্রা পালের ঘনিষ্ঠ। দিলীপ ঘোষ ও অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে বিজেপি নেতার বেশ কয়েকটি ছবিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি করেছে তৃণমূল।
যদিও এই প্রসঙ্গে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘বিমল আমাদের দলের পরিশ্রমী কর্মী। ওকে অনেক দিন ধরেই দলে ঢোকানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটে আমি যখন মেদিনীপুর লোকসভায় দাঁড়ালাম, ও অনেক পরিশ্রম করেছিল। তখনও ওকে হুমকি দেয় তৃণমূল।‘
অন্যদিকে, এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি নথি প্রকাশ করা হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দফতর থেকে। সেই নথি অনুযায়ী, বিমল হোটেলটি বিক্রম ছেত্রী নামক একজনকে লিজ দিয়েছিলেন। বিক্রম পরে আরও একজনকে লিজে দেন সেটি। বিরোধী দলনেতার দফতরের দাবি, হোটেলে ঘটে যাওয়া কোনও ঘটনার জন্য দায়ী করা যায় না বিমলকে। মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
অন্যদিকে, বিমল দাসকে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সহ সভাপতি আয়ুব আলি বলেন, ‘আমরা চাই ওই বিজেপি নেতাকে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হোক। পদে থেকে কী ভাবে তিনি এই ধরনের কাজ করতে পারেন?’
যদিও এই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের চক্রান্ত দেখছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি তপন ভুঁইয়া বলেন, ‘তৃণমূল চক্রান্ত করে প্রধানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। ওই পঞ্চায়েতটা নিজেদের দখলে আনার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে ওই প্রধানের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূল।‘
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন