আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী সোমবার সন্ধ্যায় ঝড়-বজ্রবিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলা। কিন্তু স্বস্তির বৃষ্টিতে প্রাণ হারালেন অন্তত ৬ জন। জানা গেছে, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। অন্যদিকে, নদিয়ায় বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত এক দম্পতি। এদিকে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।
আবহাওয়া দপ্তর আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল, সোমবার বিকালে ভিজতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসও ছিল। সকাল থেকেই আংশিক মেঘলা ছিল আকাশ, বিকেলের পর তা কালো মেঘে ঢেকে যায়। সন্ধ্যাতে হালকা বৃষ্টি শুরু হলেও পরে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রপাত।
জানা গেছে, সোমবার ঝড় থামলে রাতে আম কুড়োতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানা ডাঙ্গলসা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু সামন্ত। বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় ৩৫ বছর বয়সি পিন্টুর। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ির পিছনে একটি গাছের তলা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পুরুলিয়ার জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এদিন বিকেলে আড়শা থানার নামোপাড়া এলাকার তিন পড়ুয়া-সহ স্থানীয় এক ট্র্যাক্টর চালক গ্রামের অদূরে একটি পুকুরে স্নান করতে যাচ্ছিলেন। ঝড় এবং বজ্রপাত শুরু হওয়ায় চার জন রাস্তার ধারের একটি গাছের তলায় আশ্রয় নেন। ওই সময় বাজ পড়ে গুরুতর আহত হন চার জনই।
পরে স্থানীয়রা আড়শা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া রাহুল কুমার (১৯) এবং প্রিয়রঞ্জন মাহাতো (৩০) নামের ট্র্যাক্টর চালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত নবম শ্রেণির ছাত্র যুধিষ্ঠির কুমার এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সুরেশ কুমারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, জানা গেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মোটা বড়গাছি এলাকায় ইটভাঁটার অস্থায়ী ছাউনিতে শিশুকন্যাকে নিয়ে থাকতেন শ্রমিক দম্পতি। ঝড়ের দাপটে ভাঁটার দেওয়াল পড়ে মৃত্যু হয় ওই স্বামী-স্ত্রীর। আহত হয়েছে তাঁদের শিশুকন্যা। মৃত দম্পতির বাড়ি ঝাড়খণ্ডে বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের নাম যোগেশ্বর হেমব্রম এবং তালাকুরি হেমব্রম। দু’জনের বয়স যথাক্রমে ২৮ এবং ২৫ বছর। সূত্রের খবর, দুর্ঘটনায় মোট চার শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এছাড়া জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কামাল বাগদীপাড়া এলাকার বাসিন্দা উন্নতি মাঝির বজ্রপাতের জেরে মৃত্যু হয়েছে। কেতুগ্রামের পালিটা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার কিশোরী সুস্মিতা সরেনও বজ্রাঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বোলপুর মহকুমা সদর হাসপাতালে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন