হালিশহরের পৌরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা রাজু সাহানির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। গতকালই তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁর বাড়ি থেকে দু'দফায় উদ্ধার করা হয়েছে ৮০ লক্ষ টাকা এবং একটি দেশি পিস্তল। যার কোনও লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। এসবের পাশাপাশি এবার রাজুর তাইল্যান্ডেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে দাবি সিবিআই-র।
আদালতে সিবিআই আধিকারিকরা জানান, লাইসেন্স বিহীন পিস্তল তৃণমূল নেতা নিজের বাড়িতে কেন রেখেছিলেন তা যত দ্রুত সম্ভব খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বিপুল পরিমাণ টাকা এবং পিস্তল ছাড়াও রাজুর বাড়ি থেকে মিলেছে চারটি চাবির রিং। সেগুলি কোনও গোপন সম্পত্তির চাবি কিনা তা দেখা প্রয়োজন। এই জন্য তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই। এছাড়াও রাজুর বাড়ি থেকে চারটি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা আধিকারিকদের দাবি, সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামের চিটফান্ডের সঙ্গে রাজুর গভীর সংযোগ ছিল। আদালতে তাঁরা জানান, ২০১৪ সালে প্রথম এই চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। বাজার থেকে তারা ১০০ কোটি টাকা তুলেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। ওই চিটফান্ড সংস্থা থেকে রাজু সরাসরি লাভবান হয়েছেন বলেও দাবি গোয়েন্দাদের। শুধু তাই নয়, চিটফান্ড সংস্থার মালিকের কাছ থেকে 'প্রোটেকশন মানি' গ্রহণ করতেন এই তৃণমূল নেতা।
সাহানির পাশাপাশি ওই চিটফান্ড সংস্থা থেকে আরও অনেকেই লাভবান হয়েছেন বলে অনুমান সিবিআই-র। তার কারণ, এই সংস্থার বিভিন্ন শাখা সারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিল। সাহানি ছাড়াও আর কারা কারা এই সংস্থার সাথে যুক্ত আছে তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তৎপর সিবিআই।
তবে রাজুর আইনজীবীর অভিযোগ, এসব করে তাঁর মক্কেলের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজু একজন ব্যবসায়ী। তিনি একটি রাজনৈতিক দল করেন। তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান। তাঁর কাছে টাকা থাকা কোনও অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। কে, কার বাড়িতে কত টাকা রাখতে পারবেন, সেই বিষয়ে ভারতে কোনও আইন নেই।
শনিবার আদালতে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমের সামনে তৃণমূল নেতা রাজু সাহানি দাবি করেন, তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। খুব তাড়াতাড়ি সেটা বুঝতে পারবেন সকলে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন