দলের কিছু লোকের 'খারাপ কাজের' জন্য বদনামের ভাগীদার হচ্ছে তৃণমূল - এমনই মন্তব্য করলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
সোমবার, উত্তর চব্বিশ পরগনার পানিহাটির এক জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যেই স্বীকার করতে দেখা গেছে যে, কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। তবে তাঁর বক্তব্য, এতে দলের কোনও দোষ নেই। দলের কিছু লোক খারাপ কাজ করেছে। যারা খারাপ কাজ করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।
রাজ্য জুড়ে একের পর এক দুর্নীতি ঘিরে বারবার উঠে এসেছে শাসক দল তৃণমূলের নাম। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং গোরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই জেল হেফাজতে রয়েছেন তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল। এ প্রসঙ্গে সৌগত রায়ের বক্তব্য, "দলের কিছু লোকের খারাপ কাজের জন্য দল বদনামের ভাগী হচ্ছে। যাঁরা (খারাপ কাজ) করেছে, যেমন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁকে দল সরিয়ে দিয়েছে।" রহড়া বাজারের ওই সভা থেকে তিনি জানান, "তৃণমূল কংগ্রেসের ৯৫ শতাংশ কর্মী সৎ এবং নিষ্ঠাবান। তাঁরা মানুষের জন্য কাজ করেন।"
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর কামারহাটির জনসভা থেকে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বেলাগাম মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল সৌগত রায়কে। তিনি বলেছিলেন - "তৃণমূলের সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে। তৃণমূলের সব চোর বলে মিছিল করলে পার্টি অফিসে ঢুকে যেতে হবে।"
এমনকি, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের স্কুলে না গিয়েও বেতন নেওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'It’s a minor Issue' অর্থাৎ, 'এটি একটি তুচ্ছ বিষয়।' তাঁর মতে, 'অনেকেই এরকম স্কুলে না গিয়ে বেতন নেন।'
তাঁর কথায়, "এমনিতেই যারা অনুব্রতের মেয়ে নয়, তারাও স্কুলে যায় না। এ আর নতুন কি? আমি মনে করি এটা তুচ্ছ ঘটনা- ট্রাইফেলিং ম্যাটার (trifling matter)। Should not be taken seriously at all।"
উল্লেখ্য, সৌগত রায় শুধুমাত্র একজন তৃণমূল সাংসদ বা রাজনীতিবিদ নন। তিনি একাধারে প্রাক্তন অধ্যাপক। কলকাতার আশুতোষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। তাঁর মুখেই অনুব্রত কন্যা এবং বিরোধীদের প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায় - "ভাবা যায়না, কল্পনা করতে পারিনি সৌগত রায় বলে পরিচিত যে লোকটা, একজন অধ্যাপক, তিনি হাতে হাতে টাকা নেবেন, এটা ভাবতে কষ্ট হয়েছিল। দিন যতো যাচ্ছে, ততই কিছু নেতার অসভ্যতা বাড়ছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন