গোরু পাচারকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে ইডি। সোমবারই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত এই রায় দিয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই দলীয় কর্মীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে অনুব্রতর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় ৭ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় দুবরাজপুর কোর্ট। ফলে এখনই অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারছে না ইডি।
সূত্রের খবর, রবিবার অনুব্রতর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন বালিগিরি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল। এই মামলায় মঙ্গলবার সকালেই অনুব্রতকে নিয়ে দুবরাজপুর আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ। শুনানির পর ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি। এর ফলে গোরু পাচার মামলায় তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরার বিষয়টি এই মুহূর্তে স্থগিত।
শিবঠাকুরের অভিযোগ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন অনুব্রত। এমনকি তাঁকে খুনেরও চেষ্টা চালান দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা। অনাস্থার অভিযোগ তুলে বলপূর্বক তাঁকে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেন অনুব্রত। কিন্তু ছ’মাসের মধ্যে ফের পঞ্চায়েত প্রধান হন শিবঠাকুর।
অন্যদিকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে মামলার পর শিবঠাকুর মণ্ডলকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। একথা জানালেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। জানা গেছে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫টি টিকিট চেয়ে না পাওয়ার পর থেকে ‘রাগে ফুঁসছিলেন’ শিব। এমনকি, অন্য দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে শিবঠাকুর জানান, 'দলত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা অনুব্রতর কানে পৌঁছতেই আমাকে দুবরাজপুর তৃণমূল পার্টি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। আমি সেখানে গিয়ে বলেছিলাম, দলে সম্মান পাচ্ছি না। এই কথা বলতেই উনি (অনুব্রত) আমার গলা টিপে ধরেন এবং আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেন।'
তবে, দিল্লি যাওয়ার আগে হঠাৎ করে অনুব্রতকে অন্য মামলায় আদালতে পেশ করানোর ঘটনাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্ন উঠছে, গোরু পাচার মামলায় দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার অনুমতি পাওয়ার পরেই কেন দেড় বছরের পুরনো ঘটনায় মামলা দায়ের করা হল?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন