দল তাঁকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে। কোনও কর্মসূচীতে আমন্ত্রণও জানানো হয় না। এইভাবে বেশি দিন দল করা সম্ভব না - হ্যাঁ, ঠিক এই কথা বলেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ছাড়লেন বীরভূমের জেলা সহ সভাপতি বিপ্লব ওঝা। এলাকায় তিনি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁর দলত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসায় ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল।
কিন্তু ঠিক কি কারণে বিপ্লবের সাথে তৃণমূলের এই দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। গোরু পাচারকাণ্ডে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল জেল হেফাজতে রয়েছেন। তবে, জেলে থেকেও আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষ্যে কর্মীদের একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন কেষ্ট। কিন্তু এরই মাঝে তৃণমূল নেতার ইস্তফার সিদ্ধান্ত যেন নতুন করে বাড়তি চাপ তৈরি করল ঘাসফুল শিবিরে।
মঙ্গলবার দলত্যাগের আগে সাংবাদিক বৈঠক করে বিপ্লব জানান - দলত্যাগের আগে প্রথমেই আমি সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত আমার কাছে ভীষণ দুঃখের। তবুও আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতেই হচ্ছে। আমি ২০০৯ সাল থেকে আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বলছি, আমি দল ছাড়ছি। তার পিছনে অনেক কারণ আছে।
এরপর বিপ্লব বলেন, তৃণমূলের কাছে আমার আর কোনও মূল্য কিংবা গ্রহণযোগ্যতা নেই। দলীয় কর্মসূচ হোক বা বৈঠক — কোথাও আমাকে আমন্ত্রণ করা হয় না। আমার অনেক অনুগামী, শুভাকাঙ্খী আছেন। তাঁরা এ নিয়ে আমায় প্রশ্ন করেন। কিন্তু আমার কাছে এর সঠিক উত্তর নেই। দীর্ঘদিন ধরে অসম্মানিত হয়েই আমি দলত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন বিপ্লব। সেই সময় কংগ্রেস থেকে সরে যাওয়ার কথা নিজের মুখে ঘোষণা করেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি। সেই সময় তিনি ছিলেন নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান। তাঁর দলবদলের পর নলহাটি পুরসভার পরিচালন ক্ষমতাও কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের হাতে চলে যায়। ২০১২ সাল পর্যন্ত ওই পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
এই ঘটনার পর ২০১৩ সালে নলহাটি বিধানসভায় উপনির্বাচন হয়। তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছিল বিপ্লব ওঝাকে। পরবর্তীকালে তৃণমূলের হয়ে সংগঠনমূলক বিভিন্ন কাজ করেছিলেন তিনি। এরপর তিনি জেলার সহ-সভাপতি হন। একাধারে জেলা পরিষদের সদস্য পদেও রয়েছেন বিপ্লব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন