সিপিআইএমের সঙ্গে জোট অটুট রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। এই মর্মে পর্যালোচনা বৈঠক শুরুর আগের দিন সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিলেন তিনি। এই চিঠিকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মান্নানের বক্তব্য, বিজেপির সমর্থন কমছে। তাই সিপিআইএমের সঙ্গে জোট অটুট রাখলে বিরোধী জায়গা দখল করা সম্ভব। পাশাপাশি চিঠিতে রাজ্যের কয়েকজন নেতার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস। পুদুচেরীতে ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়া এবং পশ্চিমবঙ্গে মুখ থুবড়ে পড়া বাদ দিলে যদিও তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় আসা সম্ভব হয়েছে এমকে স্ট্যালিনের ডিএমকের হাত ধরে। অসম ও কেরলে বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে কংগ্রেস। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে আজ থেকে পর্যালোচনা শুরু করছে কংগ্রেস। এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহান।
এবারের নির্বাচনে বিপরীতমুখী দুটি চিত্র দেখা গিয়েছে। একদিকে, সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে কেরালায়। কেরলে পাঁচ বছর অন্তর সরকার পরিবর্তনের ধারা অনুযায়ী, এবার কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার কথা ছিল। যদিও তা হয়নি। উলটে নিজেদের শক্তি আরও বাড়িয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে এলডিএফ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএম, কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের জোট সংযুক্ত মোর্চা ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। কমেছে ভোট শতাংশও।
কিন্তু কেন এমন ফল? সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে তার পর্যালোচনা করতে অশোক চৌহানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যর কমিটি গড়া হয়। গত সপ্তাহেই এই পর্যালোচনা বৈঠক শুরুর কথা ছিল। কিন্তু রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের সৌজন্যে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। কমিটির সদস্যরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, আবদুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ শাখা সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন।
ইতিমধ্যেই অবশ্যই সিপিআই(এম) আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙতে যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এবার বামেদের সঙ্গে সমঝোতা বজায় রেখেই পথ চলার পক্ষে সওয়াল করে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিলেন মান্নান। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, কৌশলগত ত্রুটি ও কয়েকজন নেতার আচরণ মানুষ ভালভাবে নেয়নি।
তাঁর বক্তব্য, ভরাডুবির দুঃখে হাত-পা গুটিয়ে বসে না থেকে প্রতিদিন মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। বিজেপির প্রতি মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। বিজেপির জনসমর্থন কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের মধ্যে থাকলে আগামী দিনে বিরোধী পরিসর দখল করা সম্ভব হবে। পুরভোটকে লক্ষ্যমাত্রা করে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন মান্নান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন