ভয় দেখিয়ে বহু অসহায় গরীব মানুষের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা পঞ্চায়েতের ২ নং ব্লকের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩১টি পরিবার ভাঙা ঘরে বসবাস করছে। রাজ্য সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীদের।
অভিযোগ, ৫ বছর আগে তাঁদের অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা পড়েছিল তার অধিকাংশই ভয় দেখিয়ে নিয়ে নিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও গড়বেতা ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য বিদ্যুৎ সন্নিগ্রহী। টাকা না দিলে সবরকম সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার ভয় দেখানো হয়েছিল। রেশন, পানীয় জল, জব কার্ডের কাজ সহ একাধিক সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। বাধ্য হয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের হাতে টাকা তুলে দিয়েছিল তাঁরা।
জানা গেছে, এলাকাবাসীদের আধার কার্ড, জব কার্ড, ব্যাঙ্কের পাশবুক তৃণমূল নেতাদের হেফাজতে আছে। আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলে তাদের দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলিয়ে ব্যাঙ্কের বাইরে এসে সব টাকা লুঠ করে নেওয়া হয়।
অভিযোগকারীদের একজন বলেন, "তৃণমূলের তরফে বলা হয় ঠিকাদারকে দিয়ে বাড়ি করাতে হবে। তোরা পারবি না। তাই তিন কিস্তির টাকা ওদের হাতে তুলে দিয়েছি। কিন্তু এখনও বাড়ি হয়নি। নির্মাণ সামগ্রীর জিনিসও কেনা হয়ে গিয়েছিল। বহু কষ্টে দোকানদারের টাকা শোধ করতে হয়েছে। এখন কোনওরকমে খড়ের চালায় ঘর বানিয়ে থাকতে হচ্ছে।"
এলাকার বাড়িগুলোতে ইটের কাঠামো থাকলেও মাথার কোনো ছাদ নেই। বেশিরভাগ বাড়ির দেওয়াল ফুঁড়ে অশ্বত্থ গাছের চারা বেরিয়েছে। তার গায়েই খড়ের চালা রেখে কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছে পরিবারগুলো। যদিও ভাঙা বাড়িগুলোর দেওয়ালে লাগানো আছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফলক।
যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, "মিথ্যা অভিযোগ। আমি তো ত্রাণ বিলি করি। বিপদে আপদে এগিয়ে যাই। তাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তো হবেই।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন