আইনজীবী তথা রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির বিরুদ্ধে দিল্লির দরবারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর দাবি, তৃণমূলের হয়ে যেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি না লড়েন। কংগ্রেসের এই প্রবীণ আইনজীবীর বাংলার শাসক দলের পক্ষে আইনি লড়াই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের ভূমিকায় একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছে একাধিক বার অভিযোগও করেছেন রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটে হাইকোর্টের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেছে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। অধীর রঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন, এই মামলায় রাজ্যের হয়ে লড়তে পারেন মনু সিঙ্ঘভি। দলের হাইকম্যান্ডের উচিত আইনজীবীকে বোঝানো। যাতে তিনি রাজ্যের হয়ে না লড়েন। তাঁর জন্য প্রদেশ কংগ্রেসকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অধীরবাবুকে সমর্থন জানিয়েছেন অন্যান্য কংগ্রেস নেতারাও। বিষয়টি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে জানানো হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বানের দিন ঘোষণার আগে থেকেই কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি তুলেছিল। মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। প্রথমে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের সাতটি স্পর্শকাতর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর। পরে রাজ্যের অশান্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ। প্রথমে কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নিলেও পরে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
এর আগে প্রদেশ কংগ্রেসের আরেক নেতা কৌস্তুভ বাগচীও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির ভূমিকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "পশ্চিমবঙ্গে, কংগ্রেস রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায় থাকা দুর্নীতিগ্রস্ত ও নিপীড়নকারী তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে লড়াই করছে৷ কিন্তু আপনি যখন পশ্চিমবঙ্গের শাসককে রক্ষা করতে চান তখন আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যায়৷ পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের কর্মী ও নেতারা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছেন যে আমরা আপনার জন্য লজ্জিত।"
প্রসঙ্গত, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির হয়ে ইডি-সিবিআই সংক্রান্ত মামলায় লড়েছিলেন মনু সিঙ্ঘভি। কংগ্রেস আইনজীবীর দাবি, এটাই তাঁর পেশা। তিনি দলমত নির্বিশেষে আইনি লড়াই করেন। পেশার সাথে যদি রাজনীতি গুলিয়ে ফেলা হল তাহলে খুবই সমস্যা।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আমরা আইনি সাহায্য নিতেই পারি। তিনি অভিজ্ঞ আইনজীবী। আমরা কংগ্রেস করে বলে তাঁর কাছে যাই এটা একদমই ভুল ধারণা। সরকার কাকে আইনজীবী ঠিক করবে সেটা সরকারি সিদ্ধান্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন