নন্দীগ্রামে ক্রমশই নিজেদের মাটি শক্ত করছে সিপিআই(এম)। প্রায় দেড় দশক পর নন্দীগ্রামে আবারও দলীয় মুখপত্র ‘গণশক্তি’র বোর্ড লাগিয়েছে স্থানীয় বাম কর্মী-সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের টেঙুয়া বাজারের মোড়ে ওই বোর্ডের উদ্বোধন করেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
একসময় বামেদের দুর্গ হিসেবে পরিচিত নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালে জমি আন্দোলনের সময় থেকে সিপিআই(এম)-র দাপট কমতে থাকে। সেই সময় এই এলাকায় চারটি গণশক্তির বোর্ড থাকলেও পরে সবকটি বন্ধ হয়ে যায়। বামেদের অভিযোগ, ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির আড়ালে তৃণমূল ও মাওবাদীরা নন্দীগ্রামে তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর এবং দখল করা শুরু করে। গণশক্তির বোর্ডগুলিও ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর আর বোর্ডগুলি চালু করা সম্ভব হয়নি। প্রায় ১৬ বছর পর ফের নন্দীগ্রামে গণশক্তির বোর্ড লাগালো সিপিআইএম।
বোর্ড উদ্বোধনের পর সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, নিজেদের কথা জানতে, উন্নত বিজ্ঞান চেতনা, খেলাধুলা থেকে রাজনীতি সবকিছু এক মুহূর্তে জেনে নিতে গণশক্তি পত্রিকা পড়তেই হবে। আর সেই লক্ষ্যেই গণশক্তি পত্রিকা সবার কাছে উপলব্ধ করার জন্যেই এই প্রচেষ্টা করেছে পার্টির নন্দীগ্রাম ১ নম্বর এরিয়া কমিটি।
সুজন চক্রবর্তী আরও বলেন, এই সরকার আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করছে। সিভিক ভলেন্টিয়াররা ছাত্র পড়াবে, তাহলে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা রয়েছে কিসের জন্য? আসলে সিভিক পুলিশের মতো সিভিক শিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছে রাজ্যের সরকার।
সরকারি জমি বিক্রি করে দেওয়া প্রসঙ্গে চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এখন জমি দুর্নীতির কথা বলছেন। আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের জমি প্রোমোটারকে দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু তিনি যখন তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী ছিলেন তখনও এ কাজ হয়েছে।’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিধানসভায় বামপন্থীরা বলেছিল, মেট্রো ডেয়ারির জমি হাতবদল হয়েছে। কোষাগারের লোকসান হয়েছে। জমি বিক্রিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি চুপ ছিলেন। বরাবর রাস্তায়, আদালতে লড়াই করে যাচ্ছে বামপন্থীরা। এই লড়াই চলবে।’’
গণশক্তির বোর্ড উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি, দলীয় নেতা নেতা পরিতোষ পট্টনায়ক, মহাদেব ভুঁইয়া প্রমুখ। জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্বের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামবাসী তৃণমূল এবং বিজেপির উপরে আস্থা হারাচ্ছে। সে কারণেই ফের গণশক্তির বোর্ড লাগানো গিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন