চোপড়ার ছায়া এবার পূর্ব বর্ধমানে, সালিশি সভায় না যাওয়া প্রৌঢ় দম্পতিকে মারধর, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি

People's Reporter: দম্পতি জানিয়েছেন, লাঠিসোঁটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে রহমানের ১২ জন শাগরেদ এবং আরও অনেকে তাদের বাড়িতে এসে হাজির হন। তারা বলতে থাকে, আমরা শাসকের হয়ে শাসন করতে এসেছি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি, সংগৃহীত
Published on

চোপড়ার ঘটনার ছায়া এবার পূর্ব বর্ধমানে। সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় এক প্রৌঢ় দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুরো ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছেন ওই প্রৌঢ় দম্পতি।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ জুন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের চকদিঘি পঞ্চায়েত এলাকার গ্রাম কুবাজপুরে। ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ় দম্পতি শেখ বোরহান আলি এবং সাহানারা বিবি। তাঁদের সঙ্গেই থাকেন তাঁদের বড় ছেলে বসির আলিও। কৃষিকাজ করেই উপার্জন করে ওই পরিবার। অভিযোগ, বসির আলির বিবাহ সংক্রান্ত একটি বিচারাধীন মামলার বিচারের জন্য সালিশি সভা ডেকেছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ আজাদ রহমান। ১৪ জুন পুরো পরিবারকে সালিশি সভায় উপস্থিত হতে বলা হয়।

দম্পতি তাঁদের অভিযোগে লিখেছেন, “রহমানের শাগরেদরা এ-ও জানিয়ে যায় যে, আমরা যদি আজাদ রহমানের বিচার সভায় হাজির না হই, তাহলে ওরা আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে, বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। এমনকি, আমাদের প্রাণে মেরে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় ওরা।“

এরপরেই তারা ঠিক করেন সালিশি সভায় যাবেন না। পাশাপাশি, এবিষয়ে জামালপুর থানায় আগে থেকেই অভিযোগ দায়ের করেন ওই পরিবার। কিন্তু সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় ওই দিনই ওই দম্পতির বাড়ি চড়াও হন তৃণমূলের শাগরেদরা।

লিখিত অভিযোগে ওই দম্পতি জানিয়েছেন, “লাঠিসোঁটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে রহমানের ১২ জন শাগরেদ এবং আরও অনেকে তাদের বাড়িতে এসে হাজির হন। তারা বলতে থাকে, আমরা শাসকের হয়ে শাসন করতে এসেছি।“ এরপরেই তাঁদের পুত্র বসিরকে মারধর করতে থাকে তারা। বাধা দিতে গিয়ে মার খান তাঁরাও।

এরপরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় এবং বসিরকে বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই ঘটনার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানা কোনও পদক্ষেপ না করায় আতঙ্কে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন তিন জনেই।

ওই দম্পতির পুত্র বসিরের কথায় - ‘‘ভবঘুরে হয়ে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে আমাদের। বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মায়েরও শরীর ভাল যাচ্ছে না। চাষের জমির ফসল জমিতে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষতি কোনও ভাবেই পূরণ হওয়ার নয়।’’ বসির জানিয়েছেন, এমন চলতে থাকলে তাঁদের সপরিবার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

এবিষয়ে তৃণমূলের চকদিঘির অঞ্চল সভাপতি আজাদ অবশ্য বলেছেন, ‘‘বসির আলির পরিবারকে আমি চিনি। তাঁদের যে মামলার বিচার আদালতে চলছে, তার বিচারের জন্য আমি কোনও বিচার সভা বা সালিশি সভা ডাকিনি। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, বসিরের পরিবারের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটছে, তা গ্রাম্য বিবাদজনিত ঘটনা। ওই ঘটনার সঙ্গে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Chopra Case: পঞ্চায়েত ভোটের সময় বাম নেতার খুনের ঘটনাতেও গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা 'জেসিবি'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Chopra Case: চোপড়াকাণ্ডে শাসক দলকে একযোগে আক্রমণে CPIM-BJP, বিরোধীদের পাল্টা জবাব তৃণমূলের

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in