নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিলেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। সিবিআই সূত্রে খবর, সিআইডি-র দুর্নীতি দমন শাখার নথিতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে একাধিক সাক্ষ্য রয়েছে। সেই জন্যই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রথম থেকেই তৃণমূল বিধায়ক দাবি করেন তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। তিনি কাউকে চাকরি দেননি। বাড়িতে সিবিআই তল্লাশির পরেও একই কথা শোনা গিয়েছিল তাপস সাহার মুখে। মঙ্গলবারও তাঁর বয়ানের কোনো পার্থক্য ছিল না। সোমবার সিবিআই-র নোটিশ পেয়েই আজকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিলেন তিনি।
সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুর্নীতি দমন শাখার কাছ থেকে এমন অনেক নথি পাওয়া গেছে যাতে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। ওই নথিতেই প্রবীর কয়াল সহ একাধিক জনের বয়ান আছে। তছাড়া বিধায়কের বাড়ি থেকেও বহু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
এদিন নিজাম প্যালেসে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের সামনে তাপস সাহা দাবি করেন, তদন্তে সবরকম সাহায্য করবেন তিনি। দলেরই একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি চক্রান্তের শিকার।
অন্যদিকে, প্রবীর কয়ালের দাবি, তাঁকে এবং তাপস সাহাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল তাপস সাহার নাম নেওয়ার জন্য। চাপ দিয়েছিলেন এসিপি।
তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি পলাশিপাড়ার বিধায়ক ছিলেন। সেইসময় তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন। যদিও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিধায়ক সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন পরও চাকরি না পেয়ে প্রতারিতরা তাঁর কাছে টাকা ফেরত চান। তখন বিধায়ক টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এই একই ধরনের ঘটনা তেহট্ট ও করিমপুরেও ঘটে ওই বিধায়কের দৌলতে।
গত সপ্তাহে ১২ জন সিবিআই অফিসার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে তাপস সাহার বাড়িতে যান। প্রায় ১৪ ঘন্টা তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি, কলেজ এবং অফিসে তল্লাশি চালায়। পরে তাপস ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারের বড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তৃণমূল বিধায়কের পুত্রকেও ব্যাঙ্গালোরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন