সোনা চুরির অভিযোগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে সমন জারি করল আলিপুরদুয়ার আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। তা যদি না করা হয়, তবে তার কারণ দর্শাতে হবে পুলিশকে। গত শুক্রবার আলিপুরদুয়ার থার্ড কোর্টের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
মঙ্গলবার, নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে জানান আলিপুরদুয়ার আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত নারায়ণ মজুমদার। তাঁর কথায়, গত ১১ নভেম্বর এই মামলার শুনানি ছিল। সেই দিন এই মামলায় জড়িত থাকা অন্যান্য অভিযুক্তরা জামিনের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু, নিশীথের হয়ে কেউ আদালতে আবেদন করেননি। তাই, আদালত নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
তিনি আরও জানান, এই মামলাটি প্রথমে বারাসাত আদালতের অধীনে ছিল। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি আলিপুরদুয়ার আদালতে হস্তান্তর করা হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই মামলার নম্বর জিআর৭৩/০৯। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮০, ৪১১, ৪৫৭, ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শুধু তাই নয়, জিআর১০৪০/০৯-র আরেকটি মামলাতেও অভিযোগ রয়েছে নিশীথের বিরুদ্ধে। সেখানে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৭, ৪১১, ৪৬১ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের মে মাসে আলিপুরদুয়ার শহরের বাদলনগর এলাকায় জয়গুরু জুয়েলার্স নামের একটি সোনার দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এর ঠিক কিছুদিন পর একই মাসের মধ্যে আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া বীরপাড়া এলাকায় পাল জুয়েলার্স নামের এক সোনার দোকানেও চুরি হয়। দুটি ঘটনাতেই প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন কোচবিহারের বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক।
এই ঘটনার জেরে নিশীথ সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দু'টি মামলা দায়ের করা হয়। দুটি সোনার দোকান থেকেই চুরি যাওয়া যাবতীয় জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
নিশীথের আইনজীবী দুলাল ঘোষের কথায়, গত শুক্রবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফার্স্ট কোর্টে নিশীথ প্রামাণিকের হাজির হওয়ার কথা ছিল। সেখানে মন্ত্রীর হয়ে ‘অ্যাবসেন্ট পিটিশন’ জমা দিয়ে আইনজীবী নিজে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু আদালতে সেদিন বিচারক ছিলেন না। আইনজীবি জানান, "পরে আমি জানতে পারি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থার্ড কোর্টের বিচারক নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই বিষয়টি এখন আলোচনাসাপেক্ষ। আলোচনার মাধ্যমে আমরা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের দিকে এগোবো।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন