স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের সাহায্যে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালে সাথে যোগসাজশ করে ভুয়ো চিকিৎসার বিল বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃতের নাম সালেহা বিবি। বাড়ি কাটোয়া থানার আলমপুর পঞ্চায়েতের গাফুলিয়া গ্রামে। সালেহা বিবিকে নিজের গ্রামের বেশ কয়েকটি গরীব পরিবারের মহিলার কাছ থেকে স্বাথ্যসাথীর কার্ড জমা নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি অনুদানের টাকা তুলে নিয়েছেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, চেক আপ করানোর নাম করে তাঁদের কাছে থাকা স্বাথ্যসাথীর কার্ড সহ তাঁদের নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যেতেন সালেহা বিবি। সেখানে তাঁদের আঙুলের ছাপ নেওয়া হতো। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন ওই হাসপাতালে গিয়ে চেক আপ করালে তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন সালেহা বিবি।
পুলিশ জানিয়েছে, সালেহার এই প্রস্তাবের বহু গ্রামবাসী রাজি হন। হাসপাতালের সাথে যোগসাজশ করে গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সাহায্যে ভুয়ো চিকিৎসার বিল তৈরি করে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী খাতে আসা টাকা হাতাতেন সালেহা বিবি। গত ছ'মাস ধরে এই কাজ করছেন তিনি।
নিজে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতালেও অনেক উপভোক্তাকেই প্রতিশ্রুতি মতো ১০ হাজার টাকা দেননি সালেহা বিবি। অনেকে পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানান এই নিয়ে। তখনই তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সাহায্যে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন সালেহা বিবি। এরপর সোমবার গ্রামবাসীরা তাঁর বাড়ির সামনে এসে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হন। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
এই ঘটনায় সালেহা বিবির সাথে আর কারা কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি বর্ধমানের ওই বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গরিব অসহায় মানুষরা যাতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পান তার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু গরীব মানুষের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে সেই প্রকল্পে প্রতারণা করছে একদল লোক। বর্ধমানের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর প্রশ্ন উঠছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন