কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি ইউজিসি বিশ্বভারতীর গুরুত্বপূর্ণ ছ’টি বিভাগে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেছে। পাশাপাশি, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের জবাবদিহিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে।
ওই ছ’টি বিভাগ হল - বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সি, গভর্মেন্ট ই-মার্কেট, সম্পত্তি বিভাগ, লিগ্যাল সেল, অ্যাকাউন্টস ও ইঞ্জিনিয়ারিং। জানা গিয়েছে, এই প্রতিটি বিভাগ থেকেই কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। আরও জানা যাচ্ছে, এই সমস্ত দুর্নীতি হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর উপাচার্য থাকাকালীন এবং অভিযুক্তরা উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ। অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা মনে করছে, এই অভিযোগ সত্যি হলে প্রাক্তন উপাচার্যর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সূত্রের খবর, এই আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে সমস্ত তথ্য প্রমাণ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও ইউজিসির সেক্রেটারি লোকেশকুমার জাংরা ও কম্পোট্রলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলকে (ক্যাগ) ই-মেল করেছিলেন অতুল ভার্গব নামক এক ব্যক্তি। তারপরেই পদক্ষেপ করেছে শিক্ষামন্ত্রক ও ইউজিসি।
জানা গেছে, সবথেকে বেশী দুর্নীতি হয়েছে বিশ্বভারতীর বেসরকারি নিরাপত্তা বিভাগ। বিশ্বভারতীতে প্রতিদিন ২৭২ জন নিরাপত্তা কর্মীর মোতায়েন থাকার কথা। তাঁদের প্রত্যেকের বেতন মাসে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে ২০০-২১০ জন নিয়োগ করা হয়। তবে প্রতিমাসে ২৭২ জনেরই বেতন বাবদ বিল করত কর্তৃপক্ষ। যার ফলে প্রতি বছর দু’কোটি টাকা দুর্নীতি হত। অভিযোগ, অতিরিক্ত সমস্ত টাকাই চার-পাঁচজন কর্মকর্তার মধ্যে ভাগাভাগি হতো।
অন্যদিকে, আরও জানা যাচ্ছে, গভর্মেন্ট-ই-মার্কেটের মাধ্যমে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় কেনাকাটি করে। সেক্ষেত্রেও কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। আধিকারিকরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে পণ্যের গুণমান ও পরিমাণের সঙ্গে আপোস করতেন। এছাড়া। ৫০ শতাংশ কমিশনের বিনিময়ে ভুয়ো বিল বানানোর অভিযোগও ওঠে।
আরও জানা গেছে, সম্পত্তি বিভাগের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, সেই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট, গাড়ি, সোনাদানা কিনেছেন তিনি। এমনকি শান্তিনিকেতনে তাঁর বাড়ি রয়েছে। অভিযোগ উঠেছিল, মামলা চলাকালীন মোটা ঘুষ নিয়ে শান্তিনিকেতন ফায়ার ব্রিগেডের কাছে বিশ্ববিদ্যায়ের ওই জমি তিনি বিক্রি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অভিজ্ঞ জয়েন্ট রেজিস্ট্রার থাকা সত্ত্বেও একাধিক পদ আগলে তিনি একাই বসে। এর মধ্যে লিগ্যাল সেলও রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন