প্রমাণ হয়নি ঘুষ নেবার অভিযোগ - নীরবেই প্রয়াত নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বাম বিধায়ক ইলিয়াস মহম্মদ

শঙ্কুদেব পণ্ডা বা সৌগত রায় কেউই ইলিয়াস মহম্মদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। এই ঘটনার পর আর প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেননি ইলিয়াস। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিচারের আশায় ছিলেন তিনি।
ইলিয়াস মহম্মদ
ইলিয়াস মহম্মদফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

প্রয়াত হলেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিআই নেতা ইলিয়াস মহম্মদ। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সকাল ৬ টা ৫৪ মিনিটে হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

২০০১ এবং ২০০৬ - টানা দুবার বিধানসভায় নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। তাঁর বিধায়ক জমানার দ্বিতীয় পর্বেই জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে নন্দীগ্রাম। পরিস্থিতি যখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে তখন ফের খবরের শিরোনামে আসেন ইলিয়াস মহম্মদ। তাঁর বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন চালিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন তৎকালীন একটি সংবাদমাধ্যমের হয়ে কাজ করা শঙ্কুদেব পণ্ডা, যিনি পরে তৃণমূল দল ঘুরে এই মুহূর্তে বিজেপিতে রয়েছেন। ইলিয়াসের বিরুদ্ধে বিধানসভায় স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব এনেছিলেন তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সৌগত রায়। কিছুদিন পরেই বিধায়ক পদ, এমনকি দলের সদস্য পদও ছেড়ে দেন ইলিয়াস।

যদিও শঙ্কুদেব পণ্ডা বা সৌগত রায় কেউই ইলিয়াস মহম্মদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। ইলিয়াস মহম্মদ জানিয়েছিলেন, নন্দীগ্রামের ওই পরিস্থিতিতে একটি এনজিও সেখানে উন্নয়নের কাজ করতে চেয়েছিল। সেই কাজের জন্য বিধায়কের শংসাপত্রের প্রয়োজন ছিল। শঙ্কুদেব পণ্ডা সেই শংসাপত্র নিতে এসে জোর করে ১০ হাজার টাকা তাঁর পকেটে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং সেসময় একটা ছবি তুলে নেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর আর প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেননি ইলিয়াস মহম্মদ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিচারের আশায় ছিলেন তিনি।

তাঁর প্রয়াণে সিপিআইএমের নন্দীগ্রাম-১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক মহাদেব ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তেভাগা আন্দোলন থেকে শুরু করে নন্দীগ্রাম আন্দোলন, সবেতেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন উনি। অনেক উন্নত চেতনাসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। সৎ ছিলেন এবং একেবারে সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। নন্দীগ্রামবাসীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। বর্তমানে মানুষে মানুষে যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে, তিনি তার বিরুদ্ধে ছিলেন।

ইলিয়াস মহম্মদ
মুখ্যমন্ত্রীর ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করে নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in