দলের পদ পেতে গেলে দিতে হবে মোটা অঙ্কের চাঁদা। এমনই অভিযোগ উঠেছে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ এবং তাঁর আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে যেতে বিপাকে পড়তে হল তৃণমূলের কর্মীদেরকেই। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ তুলেছে দলীয় কর্মীদের একাংশ।
ঠিক কী ঘটেছে? বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলেই মূল অভিযোগ। এছাড়াও ব্লক সভাপতি হতে পার্টি ফান্ডে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল সাংসদ এবং তাঁরা আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে রানীনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মুর্শিদ নওয়াজ বলেন, "আমার ভাই আবু তাহের খানের কাছে পাঠান। রানিনগর দুইয়ের সভাপতি বদল হবে, পরে ওনার ভাগ্নে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সে আমাকে ৫০ লক্ষ টাকা, পার্টি ফান্ডে দিতে হবে বলে জানান।"
ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই তৃণমূল সদস্য জুলফিকার আলি মণ্ডল বলেন, "ওখানে সৌমিক হোসেন ভোটে দাঁড়াচ্ছে, তাঁকে হারানোর জন্য জোটের হয়ে ভোট করতে হবে। কে বলেছিলেন? আমাদের সাংসদ আবু তাহের খানের নির্দেশ।"
আগামী বছরই মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েত ভোট। তাঁর আগেই সেখানে প্রকাশ্যে উঠে এলো শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক অভিযোগ করলেন রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক সদস্য। এ বিষয়ে রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও সভাপতি শাহ আলম সরকার বলেন, "আমি অলরেডি ভোটের দিনই বলেছিলাম, যে আমাদের সাংসদ, তখন জেলা সভাপতি ছিলেন, উনি সৌমিককে হারানোর চেষ্টা করছেন।"
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল সাংসদ। পাশাপাশি এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে অতিসত্ত্বর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাহেরের পাল্টা অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির ব্লক সভাপতিই অন্যান্য নেতাদের বাধ্য করেছেন তাঁর নামে সমালোচনা করতে। তিনি আরও বলেছেন, "মুর্শিদ নওয়াজ ও জুলফিকার আলি মণ্ডল, শাহ আমলের ভয়ে ২ বছর ধরে এলাকা ছাড়া। ওরা মুচলেকা দিয়ে ফিরেছে। তাই ওদের এই কথা বলানো হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেব।"
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের বিধায়ক সৌমিক হোসেন এবং সাংসদ আবু তাহের খান, দুজনই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "তৃণমূলের মধ্যে সাকার্স চলছে, কে কখন কোন দিকে যাচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে, জোকাররা দৌড়াদৌড়ি করছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন