অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। ছাত্রনেতা আনিস খান খুনের ঘটনা নিয়ে জোর তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা রাজ্যেই। কেন খুন করা হল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীকে? পুলিশের পরিচয়ে কারাই বা ছাদে উঠে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল? এসবের সঠিক উত্তর খুঁজতে, প্রকৃত কারণ জানতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি। আজ দুপুর ২টোয় লিখিত পিটিশন জমা দিতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার।
কে বা কারা খুন করল আনিসকে? শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। আজ সোমবার। কিন্তু এখনও কোনও উত্তর মেলেনি। কেন খুন করা হল, কে করল? এসবের পাশাপাশি পুলিশের উর্দি পরে কেন এল অভিযুক্তরা? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। যদিও পুলিশ দাবি করেছে, পুলিশের কোনও টিম শুক্রবার রাতে আনিসের বাড়ি যায়নি। তাহলে তারা কারা? উত্তর মেলেনি। দু’দিন কেটে গেলেও এখনও অধরা অভিযুক্ত। এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সোমবার আনিসের বাড়ি যান ডিএসপি সুব্রত ভৌমিক। আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন। নিহতের বাবাকে রাজ্য সরকারের চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি অবশ্য আগে বিচার চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, আনিসের মৃত্যুর প্রতিবাদ-আন্দোলন ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। সঠিক তদন্তের দাবিতে পথে নেমেছে বাম-ছাত্র যুব সংগঠন। ধন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় হাওড়ার আমতায়। ভবানী ভবনে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারকে ডেকে তাঁর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট নেন ডিজি।
ভবানী ভবন সূত্রে খবর, ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক ঘটনার তদন্ত করবেন। পুলিশকে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ডিজি। এদিকে, সিবিআই তদন্তের দাবিতেই অনড় আনিসের বাবা। মৃতের পরিবারের সঙ্গে এদিন দেখা করেন সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র, কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
জানা গিয়েছে, গত ২৪ মে পুলিশকে চিঠি লিখেছিলেন আনিস। তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন যে, নিজের ও পরিবারের প্রাণ বিপন্ন হতে পারে। আমতা থানার আধিকারিককে সম্বোধন করে লেখা সেই চিঠিতে আনিস উল্লেখ করেছিলেন, শাসক দলের স্থানীয় নেতারা তাঁর ও তাঁর পরিবারের উপর হামলা করতে পারে। পুলিশ ব্যবস্থা নিক। কিন্তু পুলিশ আনিসের আবেদনে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন