আনিস হত্যাকান্ডের কয়েকদিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহত ছাত্রের বাবাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার দরুন বাবা সালেম খান যেতে পারবেন না বলে জানান। তিনি অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যেন নিজে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু সেটা হয়নি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করেননি। তবে পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যে তিনি দেখা করবেন না, সেটা স্পষ্ট করলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। একটি খাম বন্ধ করা ২০ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিট। তবে তদন্তের কোনও অগ্রগতি নেই। নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তার জেরে দিনদিন আমতার সারদা গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বিষয়টি, এমনই অভিযোগ।
সালেম খানের অভিযোগ, পুলিশ খুন করেছে আমার ছেলেকে। কোথায় দিদি আসবে আমাদের বাড়িতে সান্ত্বনা দিতে, আমি কেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাব। দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি না। সিটের তদন্তের উপর আমার কোনও ভরসা নেই। আমি হাইকোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত চাইছি।'
তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সিট আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৬৪ ধারায় কারও কোনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। ওইদিন আমতা থানার ওসি দেবজ্যোতি চক্রবর্তীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। অথচ ধৃত দুই পুলিশকর্মী জানিয়েছেন যে তাঁরা ওসির নির্দেশেই সারদা গ্রামে আনিসের বাড়ি যান। পুলিশ সুপার সৌম্য রায় নিজেই ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে জানিয়েছিলেন যে, সেদিন রাতে আমতা থানা থেকে কোনও পুলিশ যায়নি। কেন এমন মিথ্যাচার, তা জানতে চাইলে তদন্তকারীদের উত্তর মেলেনি।
আরও জানা গিয়েছে যে, দুটি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিস্তর ফারাক রয়েছে। দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তে আনিসের হাড় ভেঙে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সালেম খানের অভিযোগ, প্রতিদিন যখন খুশি লোকজন খাতা পেন নিয়ে চলে আসছে। একই প্রশ্ন কি হয়েছিল সেদিন? বলতে বলতে মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে আমার। চোখের সামনে ঘটল। আমি কি বানিয়ে বলছি? ওরা ভাবছে যদি কোনও অসঙ্গতি বেরোয়। যারা অপরাধী তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর প্রতিদিন আমাদের একইভাবে প্রশ্ন করে চলেছে। এরা কোনও তদন্ত করছে না আসলে।
ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে আট পুলিশ ও সিভিক পুলিশের নাম। তারা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। বিধায়কের সঙ্গে তাদের ছবিও সামনে এসেছে। তৃণমূলের রসপুর পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের ছেলেও তাদের মধ্যে আছে। তাদের একাংশকে ভবানী ভবনে কয়েকদফা জেরা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন