ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে আনিস খানের বাবাকে তলব করলেও তিনি যাননি। তিনি জানিয়েছিলেন, যা বলার সিবিআইকে বলবেন তিনি। এরপরই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ফোন এসেছে বলে অভিযোগ করলে নিহতের দাদা।
আনিস খানের দাদা সাবির খানের দাবি, 'সিবিআই তদন্ত চাইলে বাপ-বেটাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে’, এমনই হুমকি দিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে কোনও একটি নম্বর থেকে ফোন আসে তাঁর ফোনে। যদিও এই বিষয়ে এখনও আমতা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি।
বুধবার সকালে আনিসের দাদা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত ১টা ৪ মিনিটে তাঁর মোবাইলে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। তখন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। ফোন রিসিভ করলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ফোন করে বলছে, সিবিআই তদন্ত চাইলে দুনিয়া থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। আমি কথা রেকর্ড করি। চুপ ছিলাম। তখন (ফোনের অপর প্রান্ত থেকে) বলতে থাকে, 'কী হল? শুনতে পাচ্ছেন না? সিবিআই তদন্ত চাইবেন না। চাইলে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেব সবাইকে।' বলেই ফোন কেটে দিয়েছে।’
এই হুমকি-ফোন নিয়ে সরব হয়েছেন আনিস-হত্যার দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে বসা পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, যেভাবে হুমকি ফোন আসছে তাতে আনিসের পরিবারও সুরক্ষিত না। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। যতক্ষণ না গ্রেফতার করা হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। অন্যদিকে আজ আমতা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে এসএফআইয়ের। বিক্ষোভে অভিনেতা বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
আনিসের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের একবার ময়নাতদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। আনিসের পরিবার তাতে সম্মতি দেননি।
এসবের মধ্যেই তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয় আমতা থানার তিন পুলিশকর্মীকে। হাওড়া (গ্রামীণ) পুলিশের সুপার সৌম্য রায় মঙ্গলবার এখবর জানান। আমতা থানার এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম, হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা – এই তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যদিও আনিসের পরিবারের দাবি, খুনের ঘটনার সাথে এঁদের কারো কোনো সম্পর্কই নেই। আসল ঘটনা আড়াল করতে তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন