আজই আদালতে তোলা হয় আনিস খান মৃত্যু কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া দুই পুলিশ অধিকারিককে। আর এদিনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তাদের জবানবন্দিতে। যা ঘটেছে, সবটাই ওসির নির্দেশে হয়েছে। তাঁরা নির্দোষ। এমনটাই জানালেন তাঁরা। ধৃতরা বলেন, ‘আমরা ওসি-র নির্দেশে গেছিলাম। আমাদের বলির পাঁঠা করা হয়েছে। আমরা কিছু জানি না।’
জানা গিয়েছে, বুধবার ওই দুই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করার পর জেরা করা হয়। সেই জেরায় উঠে আসে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বৃহস্পতিবার আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীকে ভবানী ভবনে ডেকে পাঠানো হয়। তবে এর মধ্যেও খানিক মোড় আছে। ধৃতরা প্রকাশ্যে জানাননি যে, যাঁর কাছ থেকে নির্দেশ এসেছিল, তিনি আমতা থানারই ওসি।
গত শুক্রবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে বরাবরই আনিসের পরিবারের অভিযোগের আঙ্গুল ছিল পুলিশের দিকে। তাঁরা জানিয়েছিলেন, পুলিশের পোশাকে তিনজন বাড়িতে ঢোকেন। যদিও প্রথমে হাওড়ার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তা স্বীকার না করে দাবি করেন যে, ওই রাতে কোনও পুলিশকর্মী আনিস খান নামে কারওর বাড়ি যাননি, যাওয়ার নির্দেশও ছিল না।
বিক্ষোভে ফেটে পড়ে আনিসের গ্রাম। পাশে পায় কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যকে। ঘটনার আঁচ বুঝতে পেরে সিট গঠন করে রাজ্য পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেই নির্দেশ দেন। নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাসও দেওয়া হয়। যদিও আনিসের বাবা সালেম খান ও দাদা সাবির সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ। সুতরাং পুলিশ কীভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
সিট তদন্ত শুরু করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আমতা থানার ওসি, নীচুস্তরের পুলিশদের। মঙ্গলবার ওই থানার তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। বুধবার সাপেন্ডেড হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা ও সিভিক ভলান্টিয়ার প্রতীম ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়। আজ তাঁদের আদালতে তোলা হয়। এরপর প্রশ্ন ওঠে, গ্রেফতার হওয়া দু’জন কী ওইদিন রাতে আনিসের বাড়ি গিয়েছিলেন? যদিও তা তদন্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন ডিজি মনোজ মালব্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন