ভাঙড়ে রাজনৈতিক হিংসা, দ্বন্দ্ব এমনকি খুনেরও চক্রান্তের নেপথ্যে রয়েছে জেলবন্দি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলামের হাত। ভাঙড়ে দলীয় সভা থেকে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা।
মঙ্গলবার ভাঙড় কলেজ মাঠে 'কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন সভা' ছিল তৃণমূলের। যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষকে লোকসভা নির্বাচনে ভাঙড় বিধানসভা থেকে লিড দেওয়ার জন্য এই সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভা থেকেই আরাবুল ইসলামের নাম করে তীব্র ভর্ৎসনা করেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা।
সওকত মোল্লা বলেন, 'আমার কাছে বেশ কয়েকটি চিঠি আসে। যেখানে বলা হয়েছে পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়ার নাম করে ৫ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। প্রধান করার জন্য কারুর কাছ থেকে ২৫ লাখ, ৩০ লাখ এমনকি ৪০ লাখ টাকাও নেওয়া হয়েছে। টিকিট দেওয়ার নাম করে যেভাবে টাকা তছরুপ করেছে আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। নিজের ছেলেকে পোলেরহাট থেকে তুলে ব্যাওতা ২-র জেলাপরিষদের টিকিট চেয়েছিল। তাও দিয়েছিলাম'।
সওকতের দাবি, অভিষেক ব্যানার্জির কাছেও আরাবুলের এইসব কর্মকাণ্ডের খবর গিয়েছিল। তিনি বলেন, 'একদিন অভিষেক ব্যানার্জি আমাকে বলেন ভাঙড়ের এক পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী খাইরুল ইসলামকে খুনের পরিকল্পনা হচ্ছে। প্রায় ২০ লক্ষ টাকার লেনদেনও হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে রয়েছে আরাবুল ইসলাম। আর তুমি শুধু আরাবুল, আরাবুল করো। আমি বিষয়টা দেখছি। তারপরই গ্রেফতার হন আরাবুল ইসলাম।
এরপর সাংবাদিকদের সওকত মোল্লা বলেন, যে তথ্য আমাদের কাছে এসেছে প্রত্যেকটার তদন্ত হবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের অজানা এমন অনেক তথ্যও রয়েছে যেগুলো এখন সামনে আসছে। ঠিক সময় মতো আমরা সবকিছু জনসমক্ষে তুলে ধরব।'
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড়ে তৃণমূলের হারের পর ওই কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক করা হয় সওকত মোল্লাকে। একসাথেই দলের সংগঠনের কাজ করতেন আরাবুল ইসলাম এবং সওকত মোল্লা। প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা না গেলেও স্থানীয় সূত্রে খবর, সওকত মোল্লার সাথে আরাবুল ইসলামের একটা দ্বন্দ্ব রয়েছে। একাধিকবার দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে ঝামেলাও হয়েছে। ভাঙড়ের রাজনীতি থেকে কি তাহলে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছেন আরাবুল ইসলাম? সওকত মোল্লার কথায় তেমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন