নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। রাজারহাট, সাঁইথিয়া এবং সিউড়িতে রয়েছে সম্পত্তিগুলি। কোনোটা নিজের নামে আবার কোনোটা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে রয়েছে।
জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে যত তদন্ত এগোচ্ছে তত নতুন নতুন তথ্য জানতে পারছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রাজারহাটে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে এই তৃণমূল বিধায়কের। সাঁইথিয়ায় দুটি হিমঘর, একটি চালকল এবং ১ বিঘা জমির হদিশ মিলেছে। তাছাড়া বোলপুরের তাতারপুর, তালতোড়, বাঁধগোড়া মৌজা মিলিয়ে ৬ বিঘারও বেশি জমি রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে জমিগুলি কিনেছেন তৃণমূল বিধায়ক। যার আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকার ওপরে।
সিবিআই সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, এই বিধায়ক নিজের বোনের নামে বাড়ি কিনেছিলেন। কিন্তু বোন দাবি করেন জীবনকৃষ্ণের সাথে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। ওটা তাঁরই বাড়ি। বাবার নামে চালকল থাকলেও চালাতেন তৃণমূল বিধায়কই। জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী টগরীর নামেও আন্দি বাজার এলাকায় জমি ও বাড়ি আছে।
আরও জানা যাচ্ছে, বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল জীবনকৃষ্ণ সাহার। সেই সূত্রেই কি বিপুল পরিমাণ জমির মালিক হয়ে উঠেছেন তৃণমূল বিধায়ক? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সোমবার ভোর ৫.১৫ মিনিট নাগাদ গ্রেফতার করা হয় জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। আদালত ৪ দিনের সিবি আই হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে প্রায় ৩,৪০০ প্রার্থীর তথ্য উদ্ধার হয়েছে, এর অধিকাংশই নবম-দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের তথ্য। পাশাপাশি এসএলএসটির গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডেটাবেসই পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দু’বস্তা নথি। বিধায়কের দু’টি নোটপ্যাডও বাজেয়াপ্ত করা হয়। সিঁদুর কৌটোর মধ্যে একটি মেমোরি কার্ড লুকানো ছিল, সেটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিধায়কের একটি ঘর থেকে একাধিক কম্পিউটার, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, তিনটি নোটপ্যাড, হাই স্পিড ইন্টারনেট সংযোগ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফ্টঅয়্যারের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। এই ঘর থেকেই নিয়োগ দুর্নীতির যাবতীয় কাজ করা হত বলে অনুমান সিবিআই আধিকারিকদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন