উত্তর ২৪ পরগণার বারাসাতে শিশু চুরিকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরে গুজব ছড়াচ্ছিল। গুজবের জেরে একাধিক গণপিটুনির ঘটনাও ঘটেছে। এবার সেই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। সকাল থেকে বারাসাতের একাধিক স্কুলের সামনে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলছেন বারাসাতের পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া। ভয় না পাওয়ার জন্য তাঁদের আশ্বস্ত করছেন তিনি।
বারাসাতের কাজিপাড়াতে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে হঠাৎ গুজব ছড়ায় ছেলেধরার। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে একাধিক পোষ্টও। এরপর বুধবার বারাসাতের একাধিক জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় পুলিশের প্রচার।
বুধবার বারাসতের সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের সামনে ছেলেধরা গুজব ছড়ানোর জেরে এক মহিলা এবং তাঁর সঙ্গীকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক তরুণী-সহ দুজনকে। বৃহস্পতিবার সকালে সেই এলাকায় চলে পুলিশের নজরদারি। ছিলেন পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়াও। তিনি স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া বলেন, “ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আমি নিজে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছি। এক জন বললেন, ‘আমি ১১ বছর ধরে এখানে আসছি, কোনও দিন এ রকম কিছু শুনিনি। এটা সম্পূর্ণ গুজব।’ আমি নিজে এখানে এসেছি কারণ, গতকাল (বুধবার) এখানে দু’টি ঘটনা ঘটেছে। ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।“
সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রতীক্ষা আরও জানান, “সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছি। আজ আদালতে পাঠিয়ে চার জনকে নিজেদের হেফাজতে চাইব। ভুয়ো পোস্ট করার জন্য দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা তাঁদের জেরা করে জানতে চাইব যে, কেন এ রকম পোস্ট করা হল, কে তাঁদের বলেছেন যে এ রকম ঘটনা ঘটেছে, বা বাচ্চা চুরি করেছে? আমরা এমন অনেক নাম পেয়েছি যাঁদের ফেক অ্যাকাউন্ট আছে। ফেসবুক থেকে নাম নিয়ে আরও গ্রেফতার করা হবে।“
উল্লেখ্য, কাজিপাড়ায় শিশুমৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে পারিবারিক বিবাদের জেরে। মূল অভিযুক্ত শিশুটির জেঠু। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কারণে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন