পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, তত বেশি করে প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক উদ্বেগজনক ঘটনা। কখনও বীরভূম, আবার কখনও উত্তর চব্বিশ পরগণা বা পশ্চিম মেদিনীপুর। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই অভিযোগের তীর শাসক দল তৃণমূলের দিকে। এবার তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিবিদ্ধ হতে হল বসিরহাটের এক পুলিশকর্মীকে। যার জেরে নির্বাচনের আগে ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা।
সূত্রের খবর, গত সোমবার রাত ১০টা নাগাদ বসিরহাটের শাকচুড়ার বাজারে ঘটনাটি ঘটে। গোটা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী হয়েছে। সোমবার রাত থেকেই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বসিরহাটের স্থানীয় তৃণমূল নেতা সিজারুল ইসলাম বেশে। সিজারুল বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নজরুল হকের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। মূল অভিযুক্ত সহ গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, শাকচুড়া বাজারের অন্তর্গত টাকি রোডের উপরে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় রয়েছে। সোমবার রাতে সেখানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক কোন্দল শুরু হয়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পর দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়, যার জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বসিরহাট থানার পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে সিজারুল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গুলির আঘাতে গুরুতর জখম হন অনন্তপুর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল প্রভাস সর্দার (৪২)। তাঁর বাম কাঁধে গুলি লাগে। তাঁকে বসিরহাটের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই পুলিশ কর্মীর অবস্থা সংকটজনক।
স্থানীয় তৃণমূল কর্মী কুতুবুদ্দিন গাজীর কথায়, 'আমাদের এক নেতা বাজারে গিয়েছিলেন। তখন সিজারুলের অফিস থেকে বেশ কয়েকজন বেরিয়ে এসে আচমকা তাঁকে মারধর করে, বন্দুকও দেখায়। আমরা ছুটে গেলে আমাদেরও মারধর করা হয়। আমরা সরে আসি সেখান থেকে।' এরপর পুলিশের গাড়ি আসে, সেখানে ৪ জন কর্মী ছিলেন। জানা গেছে পুলিশ তৃণমূলের অফিসে ঢুকতেই গুলির আওয়াজ আসে। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার হাতে বন্দুকও দেখা গেছে। ওই কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশকর্মীর কথায়, গণ্ডগোলের খবর পাওয়া মাত্রই পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। ছ'সাত বার ঢিল ছোঁড়ার পর আচমকা গুলি চালানো শুরু হয়। হঠাৎ দেখি আমাদের এক কন্সটেবল মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। কীসের জন্য এই গণ্ডগোল বা ঝামেলা, তা আমরা জানি না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন