গরু পাচার মামলার তদন্তে লটারি কাণ্ডের যোগ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গত সপ্তাহে, আলাদা চার্জশিটে এই তথ্য জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সূত্রের খবর, বীরভূমের একটি নির্দিষ্ট লটারি সংস্থার মাধ্যমে কিভাবে সাধারণ মানুষের জেতা লটারির টিকিট হাতিয়ে নিতেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডল, এবং সেই লটারির টিকিটের মাধ্যমে দুর্নীতির কালো টাকাকে সাদা করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠাতেন তিনি, সেই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ইডির চার্জশিটে।
ইডির চার্জশিটে অভিযোগ করা হয়েছে, বোলপুরে ‘গাঙ্গুলী লটারি এজেন্সি’ নামক এক লটারি বিক্রেতা আগে থেকে অনুব্রতকে জানিয়ে দিতেন কে লটারি জিতেছেন এবং কত টাকার লটারি জিতেছেন। এরপর অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে লটারি বিজয়ীদের কাছ থেকে সেই টিকিট কম মুল্যে কিনে নিতেন। এই পুরো প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারী হিসাবে বোলপুর পৌরসভার এক কাউন্সিলরের নাম জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে, গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে লটারি কাণ্ডের কথা প্রথম সামনে আনে সিবিআই। তারপরেই, লটারি কেলেঙ্কারি নিয়ে আলাদা করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়েও চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পান সিবিআই আধিকারিকরা। জানা যায়, শুধু একবার ১ কোটি নয়, ১০ থেকে ১২ বার লটারি জিতেছেন অনুব্রত মন্ডল ও তাঁর মেয়ে।
সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লটারির পুরস্কারের টাকা একাধিকবার লেনদেন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, দুই ব্যক্তির এই ধরনের ঘন ঘন লটারির টিকিট জেতার বিষয়টি কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়।
লটারি কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তার মধ্যে কয়েকজন ব্যক্তি দাবিও করেছেন যে, লটারি জেতার টিকিট অনেক কম মূল্যে অনুব্রত মণ্ডলের সহযোগীদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। আর, ইডি’র চার্জশিটেও সেই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, সুকন্যা মণ্ডলের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০,০০০ টাকার থেকে কিছু কম টাকা ঘন ঘন লেনদেন হয়েছে। ইডি’র অনুমান, এটি করা হয়েছে প্যান কার্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা এড়াতে।
ব্যাঙ্কিং নিয়ম অনুসারে, ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের যে কোনও নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে প্যান নম্বর উল্লেখ করতে হয় আমানতকারীকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন