মন্ত্রী মাহাতোর নিরাপত্তা তুললো রাজ্য - সেলিব্রিটি নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় যেতে পারে মন্ত্রিত্বও

দলের সেলিব্রিটি নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিল সরকার। বুধবার, রাজ্য সরকারের তরফে তৃণমূল কংগ্রেসের তিনবারের বিধায়ক তথা ক্রেতা-সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদপ্তর সূত্রের খবর, নির্বাচিত বিধায়ক হিসেবে মাহাতোকে কেবলমাত্র একটি দেহরক্ষী প্রদান করা হবে। তাঁর বাকি নিরাপত্তারক্ষীদের পুলিশ লাইনে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক জানান, আবেগতাড়িত হয়ে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এই ধরণের মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ক্ষমাও চেয়েছেন তবে কোনও লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসেছেন শ্রীকান্ত। নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার পর এবার তাঁকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে অপসারণ করা হবে কিনা সেই নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য মন্ত্রিসভার এক সদস্য জানান, "আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।"

প্রসঙ্গত, দলের সেলিব্রিটি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিষ্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এমনকি, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেও মন্তব্য করেছিলেন। দলীয় কর্মীসভায় মাহাতোকে বলতে দেখা গেছে - মমতা ব্যানার্জী চোর, জোচ্চোর, খারাপ লোকদের কথা শুনে চলেন এবং তাঁদেরকেই দলের সম্পদ বলেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে শ্রীকান্ত বাবু বলেছেন, "দেবাদিদেব মহাদেব, মুনমুন, জুন মালিয়া, নুসরৎ, মিমিঝিমি, সন্ধ্যা রায়, সায়নী, সায়ন্তিকা, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ, উত্তরা সিংহ - যারা দলকে লুটেপুটে খাচ্ছে তাঁরা যদি সম্পদ হয়, তাহলে তো আর পার্টি করা যাবে না।"

এরপরই দলের পক্ষ থেকে মাহাতোকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় এবং প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়।

তৃণমূল সূত্র মারফত জানা গেছে, মাহাতো তাঁর মন্তব্যে যে সেলিব্রিটি নেতৃত্বদের নাম নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই অত্যন্ত বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পুরো বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনেন। মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টিকে হালকাভাবে নেননি এবং তাঁর নির্দেশেই মাহাতোকে শোকজ করা হয়।