তাঁর যে দলের প্রতি ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে, তা গত বেশ কয়েকদিন ধরে স্পষ্ট। এবার তিনি আরও খোলসা করলেন নিজের মনোভাবকে। অভিমানী স্বরে স্পষ্টই জানালেন, ‘বিজেপির হয়তো আর আমাকে প্রয়োজন নেই।’ আগামী ১২ এপ্রিল রাজ্যের আসানসোল ও বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। কিন্তু কোনও কেন্দ্রের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির হয়ে তারকা প্রচারকের তালিকায় নাম নেই হুগলির সাংসদ তথা উত্তরাখণ্ডের পর্যবেক্ষক লকেট চট্টোপাধ্যায়ের।
আর ওই ইস্যুতেই যেন এতদিন মনের মধ্যে চেপে রাখা ক্ষোভ, অভিমান, অসন্তোষ প্রকাশ পেল। শুধু তাই নয়, কিছুটা বিস্ফোরকও তিনি। শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ‘বিজেপির হয়তো আর আমাকে প্রয়োজন নেই। আমাকে দল কেন তারকা প্রচারকের তালিকায় রাখেনি, তা দলই ভালো বলতে পারবে। মনে হয়, আমাকে যোগ্য মনে হয়নি।’
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর থেকেই অন্তর্দ্বন্দ্বে কার্যত জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি। উপনির্বাচন, পুরসভার ভোটে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শুক্রবার লকেট চট্টোপাধ্যায় সেই কোন্দল আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিলেন। এর আগে ভোটের ফলপ্রকাশের পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসত। আর এবার নির্বাচনী প্রচারকে কেন্দ্র করেই তরজা বাড়ছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ জলঘোলা করতে চাইছেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা প্রতিক্রিয়া না দিয়ে তিনি শুধু বলেন, ‘দলের কোনও নেতার মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিই না। এটাই আমাদের ঘোষিত নীতি।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য সভাপতির মুখে কুলুপ আঁটাতেই স্পষ্ট যে, অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।
সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির কমিটি গঠন নিয়ে বেড়েছে বিক্ষুব্ধদের সংখ্যা। সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন লকেট। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত দুই নেতা রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন লকেট। রীতেশ আবার বঙ্গ বিজেপিতে ব্রাত্য হয়েও জাতীয় মঞ্চে প্রাসঙ্গিক। যোগী আদিত্যনাথের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন