রাজ্য-রাজনীতিতে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল যে, বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে সেই জল্পনা আরও জোরালো হয়। সেকথা তাঁর কানেও পৌঁছয়। এব্যাপারে জল্পনা না বাড়িয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি। জানালেন, তাঁকে কেউ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা বলেনি। তিনি সেরকম কোনও আবেদন করেননি। তবে মুখ্যমন্ত্রী চাইলে তিনি রাজ্যের উন্নয়নে পরামর্শ দিতে পারেন গোপনীয়তা বজায় রেখেই। তিনি নিজেকে ঝরা মুকুল নয় বলেও উল্লেখ করেন।
বিজেপির হেস্টিংসের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অশোকবাবু বলেন, 'আমি জল্পনার শিকার হয়েছি। আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা 'কবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি', এই প্রশ্ন করেন না।' কিছুটা ব্যঙ্গের সুরে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়কে নিশানা করে বলেন, 'এবার বালুরঘাটে আমের মরসুম ভালো ছিল। বসন্তে কিছু আমের মুকুল এলেও তা ঝরে যায়। আমি ঝরা মুকুল নই। আমি বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ি। আমি গঠনাত্মক বিরোধিতা অর্থাৎ কনস্ট্রাকটিভ অপোজিশন করতে চাই।'
সাম্প্রতিক দলবদলের রাজনীতি নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্নের পরিবর্তে তিনি ১৯৬০-এর দ্বিতীয়ার্ধের রাজনীতির উল্লেখ করে পরিসংখ্যান দিয়ে বললেন, '১৯৬৭-৭১-এর মধ্যে ১৪২ জন সাংসদ এবং ১ হাজার ৯৬৯ জন বিধায়ক দলবদল করেন। ৪ বছরের মধ্যে ৩২টি সরকারের পতন হয়। ২১২ জন দলবদলু মন্ত্রিত্বে পুরস্কৃত হন।'
পিএসির চেয়ারম্যান হিসাবে বিজেপির পক্ষে তাঁর নাম ওঠে। যদিও শেষপর্যন্ত নিয়োগ হন মুকুল রায়। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। গতকাল কলকাতা হাইকোর্ট বিষয়টির সমাধান করতে স্পিকারকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এ নিয়ে অশোক লাহিড়ী জানালেন, তিনি স্পিকার ও আদালত কারও সম্পর্কেও কোনও বাজে কথা বলতে চান না।
তাঁর কথায়, পিএসি হচ্ছে সরকারের সিএমও অর্থাৎ চিফ মেডিক্যাল অফিসার।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে অশোকবাবু বলেন, 'দুটি দেশের মধ্যেও আলোচনা হওয়া বৈদেশিক নীতির সবকিছু বাইরে বলা যায় না। বিজেপি বিধায়ক হলেও কেউ কোনও কথা গোপন রাখার কথা বললে, তা গোপন রাখতে হবে। সরকার কোনও গোপন তথ্য দিলে, সেটা জনসমক্ষে কেন আনব? এটা পেশাদারিত্বের দিক থেকে ঠিক নয়।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন