মাত্র সাতদিনের ব্যবধান। তারই মধ্যে ফের চড়ুইভাতিতে মেতে উঠলেন বিজেপির বিক্ষুব্ধরা। রবিবার নেতাজি জন্মজয়ন্তীতে উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় বনভোজনের আয়োজন করেছেন শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। গত সোমবার বনগাঁয় চড়ুইভাতির আয়োজন করেছিলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং বিক্ষুব্ধরা। তা নিয়ে বিতর্ক কিছু কম হয়নি। যদিও শান্তনু দাবি করেছিলেন, শীতের মরশুমে নিছকই আনন্দে মেতে উঠতে এই চড়ুইভাতির আয়োজন করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
উত্তর ২৪ পরগনা বিজেপি সূত্রের খবর, শান্তনু ছাড়াও ওই বনভোজনে দলের কয়েক জন বিধায়ক এবং জন প্রতিনিধি থাকতে পারে। ঘটনাচক্রে বনগাঁর বনভোজনে ছিলেন রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসু, বর্তমান কমিটির মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া-সহ অনেকেই। তাঁরা এ বারের চড়ুইভাতিতেও থাকবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এদিনের চড়ুইভাতি কোথায় হচ্ছে? গোবরডাঙার গৈপুরে বিজেপির গোবরডাঙা পুরমণ্ডলের সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগানবাড়িতে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে দ্বিতীয় বার এই বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছে। মেনুতে থাকছে ভাত, ডাল, বেগুনি, চিকেন কষা, মাছ, চাটনি ও পাঁপড়। রবিবার সকাল থেকে তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে এদিন বিক্ষুব্ধদের শিবিরে আলোচনায় কী উঠে আসে, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহলে।
গত বারের বনভোজন শেষে শান্তনু বলেছিলেন, ‘সুরের থেকে বেসুর শুনতে ভাল লাগলে মানুষ সেটাই গ্রহণ করে। অর্থাৎ যে অবস্থান এখন আছে, ভারতীয় জনতা পার্টির তাতে আগামীতে বেসুরোদের সংখ্যা বেশি হলে সেই সুর মানুষ গ্রহণ করবেন। সেই অবস্থান তৈরি হতে যাচ্ছে আগামীতে।’ রাজনৈতিক মহলে মনে করছে, নতুন ‘অবস্থান’ তৈরির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বনভোজনের আয়োজন।
প্রসঙ্গত, বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যাঁরা দলের হয়ে কাজ করেননি, লোকে চেনে না, তাঁদের পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরে। যাঁরা বিপদে-আপদে পাশে থেকেছেন, তাঁরা মর্যাদা না পেয়ে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীতে নাম লিখিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। এছাড়াও রাজ্য কমিটিতে মতুয়ারা বিশেষ গুরুত্ব পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সবমিলিয়ে বিজেপিতেএই মুহূর্তে দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে বলেই খবর। বিক্ষুব্ধদের নিয়ে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী ব্যবস্থা নেয়, সে দিকে তাকিয়ে সবাই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন