বছরখানেক আগে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বাঁকুড়ার এক আদিবাসী বাড়ি এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। ওই পরিবারে সেদিন মধ্যাহ্নভোজন সেরেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একইসঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দরিদ্র গৃহকর্তার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হবে। কিন্তু এক বছর পর ওই পরিবারের অবস্থার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। একই রয়ে গিয়েছে বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের আদিবাসী হাঁসদা পরিবারের অবস্থা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদা অভিযোগ, ‘আমাকে নিয়ে রাজনীতি করেছে বিজেপি–তৃণমূল। আগে আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিক ওরা। এখনও ওরা কেউই মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি।’ প্রসঙ্গত, ছোট বয়স থেকেই ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছে বিভীষণ হাঁসদার মেয়ে।
ঠিক এক বছর আগের কথা। ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর। ওই গ্রামে বিভীষণ হাঁসদার বাড়ি গিয়ে অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজ সারেন। সেখানে নিজের মেয়ের অসুস্থতার কথা জানাতে অমিত শাহ নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন।
কিন্তু কেউই কথা রাখেনি। সেখানকার সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। এই আদিবাসী পরিবারকে কাছে টানতে চায় শাসক-বিরোধীদল দু'পক্ষই। বিভীষণ হাঁসদা বলেন, ‘বিজেপি সাংসদ ব্যবস্থা করেছিলেন ওষুধের। কিন্তু ২–৩ মাস পর থেকে আর খোঁজ নেই। তৃণমূল কংগ্রেস কিছু দেয়নি।’ ওই পরিবারের মণিকা হাঁসদা বলেন, ‘আমি নিজে রান্না করে খাইয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।'
প্রসঙ্গত, তখন বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গ জয়ের আশায় তোড়জোর শুরু করেছিল বিজেপি। রাজ্যে এসে প্রচারে ঝড় তুলেছেন জেপি নড্ডা থেকে অমিত শাহ, বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতারা। সেই সঙ্গে রাজ্যের কৃষক, বাউল, শ্রমিকদের বাড়ি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যাহ্নভোজনের জায়গা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। আদিবাসী পরিবার হিসেবে বিভীষণদের বাড়িতে যান অমিত শাহ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন