বিজেপির নতুন জেলা সভাপতি নির্বাচনের পর থেকেই দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকাশ্যে চলে আসছে। যিনি কাজ করেন, যিনি সর্বজনগ্রাহ্য, তাঁকে সভাপতি করা হয়নি। এমনটাই অভিযোগ দলের নেতা-কর্মীদের। তাই প্রতিবাদস্বরূপ অনেকেই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ লেফট করেন। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দেন। আর এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন বাঁকুড়ার দুই ‘বিক্ষুব্ধ’ বিজেপি বিধায়ক।
ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা ও ইন্দাসের নির্মলকুমার ধাড়া দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়তে চাইলেন। এব্যাপারে দলকে চিঠি দিলেন তাঁরা। যদিও কেন তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিলেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি তাঁরা। অমরনাথ শাখার বক্তব্য, এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বাঁকুড়ার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, আর হয়তো বিজেপিতে থাকবেন না তাঁরা। তৃণমূলে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়েও চলছে আলোচনা।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির বদল চেয়ে অমিত শাহ জেপি নাড্ডাকে চিঠি পাঠিয়েছেন ওন্দা, ইন্দাসের বিধায়ক-সহ মোট চারজন। আর তারপরই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়তে চেয়ে আবেদন জানালেন। এভাবেই ধাপে ধাপে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন বাঁকুড়ার ‘বিক্ষুব্ধ’রা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
ওন্দার বিধায়ককে সম্প্রতি দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেওয়ার বিষয়ে বলেন, 'আলাদা করে ক্ষোভ নেই। যা নিয়ে আপত্তি, তা যেখানে জানানোর, সেখানেই জানিয়েছি। আর নিরাপত্তা ছাড়ার বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত।' ইন্দাসের বিধায়ক নির্মলকুমার ধাড়া কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাননি।
তবে বিধায়করা যাই বলুন, জেলার তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জোর চর্চা চলছে। অভিজ্ঞ মহলের একাংশের অনুমান, এই বিক্ষুব্ধরা বিজেপির পুরনো কর্মী। তাই দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ায় ক্ষোভ, অভিমান হওয়াই স্বাভাবিক। দলের কাছ থেকে ধাক্কা খাওয়ার পর তাঁরা দলত্যাগের পথে হাঁটলে, অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই ‘বিক্ষুব্ধ’রা ঘাসফুলে গেলে লাভ শাসকদলেরই।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার দুই সাংগঠনিক জেলা বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে গত ২৫ ডিসেম্বর সাংগঠনিক সভাপতি পদে রদবদল হয়। বাঁকুড়ার সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি ছিল বিবেকানন্দ পাত্র। তাঁকে সরিয়ে বসানো হয় অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা সুনীল রুদ্র মণ্ডলকে। বিষ্ণুপুরেও একই ঘটনা ঘটে। সেখান সুজিত অগস্তিকে সরিয়ে বিল্বেশ্বর সিংহকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরই দলের অন্দরে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন