গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার লক্ষণ নেই বঙ্গ বিজেপিতে। আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে বঙ্গ বিজেপি। নতুন ঘটিত রাজ্য কমিটিতে জায়গা না পেয়ে একদিকে রয়েছে শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন মতুয়া বিধায়করা সহ সায়ন্তন বসু, জয়প্রকাশ মজুমদাররা। অন্যদিকে, বিজেপির বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার হিড়িক উঠেছে বঙ্গ বিজেপিতে। রাজ্য কমিটিতে পদ খুইয়ে আগেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছিলেন সায়ন্তন বসু এবং বিশ্বপ্রিয় চৌধুরী। তারপর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন পাঁচ মতুয়া বিধায়ক। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য কমিটিতে কোনও মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নেই। বিজেপির সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গেছেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা মতুয়া সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও। হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন খড়গপুরের বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায় ও শঙ্কুদেব পন্ডাও।
এই পরিস্থিতিতে, শনিবার পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউসে বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর জয়প্রকাশ মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্রোহের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন শান্তনু ঠাকুর। তাঁর দাবি, কোনও নেতা সংগঠনকে দখলে রাখতে চাইছেন। তাই যে কমিটি করেছেন তাতে ৯০ শতাংশ কাজের লোককে বাদ দিয়েছেন। পাশাপাশি সময়মতো বোমা ফাটানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যদিও কী বোমা, তা স্পষ্ট করেননি।
অন্যদিকে, বৈঠক শুরুর আগেই পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউসের বাইরে এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার টাঙানো হয়। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাশীল বিজেপি গোষ্ঠীর এই পোস্টার। পোস্টারে লেখা, 'সেটিংবাজ, চিটিংবাজ নেতারা দূর হটো। দুনিয়ার জালি বিজেপি নেতারা এক হও।' রাজ্য বিজেপিকে শেষ করার চক্রান্তকারীদের থেকে সাবধান হওয়ার হুঁশিয়ারিও পোস্টারে দেখা যায়। বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার, সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সমীরণ সাহা, রীতেশ তিওয়ারি সহ একাধিক সাংগঠনিক নেতারা।
উল্লেখ্য, শ্যমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও পিআর ঠাকুরের নামে নতুন মঞ্চ তৈরি করতে চলেছেন বিক্ষুব্ধরা। শনিবার শান্তনু ঠাকুরের সামনেই এই নতুন মঞ্চ তৈরির খসড়া প্রস্তুত হয় বলে সূত্রের খবর। সামনের সপ্তাহে বিজেপির ১০ জন সাংসদ ও ৩০ জন বিধায়ককে নিয়ে বিশেষ বৈঠক হতে পারে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বিক্ষুব্ধদের প্রস্তাব মেনে না নিলে নতুন মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করবে।
বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা আর এক বিক্ষুব্ধ নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, 'আমরা দলবিরোধী কিছু কাজ করছি না। আমাদের বক্তব্যগুলি আমরা শান্তনু ঠাকুরকে জানিয়েছি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন