SFI-র রক্তদান শিবিরে হামলা TMC-র, হাত থেকে চ্যানেল খুলে মার, থানা ঘেরাও করার হুমকি মীনাক্ষীর

মঙ্গলবার একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল কুলটি কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখানেই আচমকা হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে।
আক্রান্ত এস এফ আই নেতা অনিকেত মণ্ডল
আক্রান্ত এস এফ আই নেতা অনিকেত মণ্ডলগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

কুলটি কলেজের অভ্যন্তরে রক্তদান শিবির চলাকালীন ভয়াবহ হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেখানেই আচমকা হামলার পাশাপাশি কলেজ ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।

সূত্রের খবর, রক্তদান শিবির চলাকালীন সেখানে চড়াও হয়ে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় রক্তদাতাদের। তাঁদের পেটে, পিঠে ক্রমাগত লাথি, ঘুষি, কিল, চড় মারে বহিরাগত দুষ্কৃতিরা। এমনকি রক্ত টানার সময় হাতের শিরা থেকে টেনে-হিঁচড়ে খুলে নেওয়া হয় চ্যানেল। প্রায় ৩০ জনের বাহিনী এসে তছনছ করে দেয় শিবির।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সেই সময় বেডে শুয়ে রক্তদান করছিলেন এসএফআই পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনিকেত মণ্ডল। চ্যানেল খুলে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। কলেজের শিক্ষাকর্মী সুব্রত বাগচী অনিকেতকে বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এমনকি, বাদ যাননি কলেজের অধ্যক্ষও। তাঁকেও মাটিতে ফেলে মারধর করার অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ জানালে তাঁদেরকেও মারধর করা হয়। বহিরাগতদের আক্রমণে কলেজের শিক্ষাকর্মী সুব্রত বাগচী এবং এসএফআই নেতা অনিকেত মণ্ডল ছাড়াও জখম হয়েছেন এসএফআই লোকাল কমিটির সম্পাদক জুনেদ খান, এসএফআই নেত্রী অনিন্দিতা সাহা, সুস্মিতা চক্রবর্তী সহ আরও অনেকেই।

গুরুতর জখম অবস্থায় সুব্রত বাগচীকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোম এবং অনিকেত মণ্ডলকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি জানা মাত্রই কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী, এসএফআই জেলা সম্পাদক সুদীপ কুড়ি সহ অন্যান্য ছাত্র-যুব নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখার্জী।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে মীনাক্ষী বলেন, "পড়ুয়াদের অপরাধ ওরা ব্লাড দিতে গেছে! যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় তারা টিএমসি করে। যারা রক্ত দিচ্ছিল তাঁরা কুলটি কলেজের পড়ুয়া। কলেজ কর্তৃপক্ষ একটা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে, তাঁরা সেখানে যাবে না? পড়ুয়ারা রক্ত দিতে গিয়ে ভুল করেছে? যারা অসুস্থ তাঁরা মার খেল, রক্তপাত হল। মেয়েদের পেটে, তলপেটে এবং গোপনাঙ্গে লাথি মারা হল। আর যারা মারল, পুলিশ এখন তাদের সাথে বসে মিটিং করছে।"

ডিওয়াইএফআই নেত্রী আরও বলেন, "অসুস্থ ছাত্র-ছাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ বসে রয়েছে থানার সামনে। আমরা তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলছি পুলিশকে। পুলিশ বলছে নিজেরা নিয়ে যান। আমাদেরকেই যখন সবটা দেখতে হবে, আমরা তখন 'সবটা' দেখেই ছাড়ব। গুণ্ডাগিরি করে কুলটিতে থাকা যাবে না। হয় এখানে মানুষ থাকবে, নাহলে গুণ্ডা থাকবে।"

পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করে সিপিআই(এম) নেত্রী জানান, অবিলম্বে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতিদের গ্রেফতার করা না হলে বুধবার থানা ঘেরাও করা হবে। যারা রক্ত দিচ্ছিল, তাঁরা করোনাকালে কুলটি রেড ভলেন্টিয়ার্সের দায়িত্ব পালন করেছে। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে তাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, খাবার, ফল, ওষুধ সরবরাহ করেছে। তাঁদের উপর হামলাকারী এবং মদতদাতাদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

আক্রান্ত এস এফ আই নেতা অনিকেত মণ্ডল
সভাস্থল থেকে বিতরণের জন্য কেনা শীতবস্ত্র উধাও, সভা থামালেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
আক্রান্ত এস এফ আই নেতা অনিকেত মণ্ডল
ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরাতে পুলিশের সাথে তীব্র বচসা CPIM নেতৃত্বের, বাধা উপেক্ষা করেই এগোলো মিছিল

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in