সিবিআই গত কয়েকমাস ধরেই গোরু পাচারকাণ্ডে জোরদার তদন্তে নেমেছে। ভোটের আগে যার জের রাজ্য রাজনীতিতেও পড়েছে। একদিকে যেমন রাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ট এক নেতা সিবিআইয়ের তৎপরতার জন্য এখন পলাতক। অন্যদিকে, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের অফিসারদেরও এই কাণ্ডে যোগসূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু বিএসএফ সরকারিভাবে এ নিয়ে এতদিন মুখ না খুললেও শুক্রবার বিএসএফের এডিজি পঙ্কজ কুমার সিং সাংবাদিক বৈঠক করে গরুপাচার নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।
তাঁর বক্তব্য অনুসারে গরুপাচারে যেমন কয়েকটি চক্রের যোগ রয়েছে, তেমনই তার বাহিনীতেও কয়েকজন এই অসাধু কারবারের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কড়া মনোভাব বিএসএফের। ইতিমধ্যেই ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারিতে কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছে বিএসএফ। যার জন্য ৩ জন বিএসএফ জওয়ানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বদলি হয়েছেন ৬ বিএসএফ অফিসার।
এডিজি কার্যত মেনে নিয়েছেন, এখনও রাজ্যের সীমান্ত পেরিয়ে গরুপাচার হয়েছে এবং হচ্ছে। একটি রিপোর্টও এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে ২০১৮ সালে ৪৭ হাজার, ২০১৯ এ ৩৯ হাজার, ২০২০ সালে ১২ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল বিএসএফ।
বিএসএফ কর্তার কথায়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টালিজেন্স, ইন্টালিজেন্স ব্যুরো এবং বিএসএফ সকলে একত্রে গরুপাচার নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।
তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লকডাউনের সময় রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় গরুপাচার অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে পাচার বেড়েছে। কিন্তু বিএসএফও নিজেদের নজরদারি বাড়িয়েছে।
তাঁর কথায় - সীমান্ত দিয়ে শুধুমাত্র গরু নয়, সোনা, রূপো, মাদক পাচার হচ্ছে। ধরপাকড়ও বাড়ছে। আমরা মনে করি আমরা যা ধরপাকড় করছি তা মাত্র ২০ শতাংশ। বাকি ৮০ শতাংশ পাচার হয়ে রাজ্যে ঢুকছে কিংবা রাজ্যের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। নজরদারির জন্য নাইট ভিশন ক্যামেরা ও নজরদারি কুকুরের (জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডর) সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী থানাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়সাধন করে তদন্ত চলছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন