বোনকে বাঁচতে দেয়নি দুষ্কৃতীরা। কিন্তু তাদের সবাইকে গ্রেফতারও করা হয়নি। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি ওই অপরাধের। এখন শুধু বোনের বিচার চেয়ে প্রার্থনা করা ছাড়া ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝরনা বিবির মনে সম্ভবত আর কিছু নেই। যদিও বর্ধমান থানায় ১৪ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ মাত্র চারজনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মূল অপরাধী এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তুহিনা খাতুনের পরিবারের অভিযোগ, তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বাদশার দলবল। পুলিশের বক্তব্য, বাদশাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সেই বাদশাকে আবার বর্ধমানের বিধায়কের খোকন দাসের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাকে আটক করা হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্নের কোনও জবাব নেই।
প্রসঙ্গত, বর্ধমান রাজ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তুহিনা খাতুন। পুরভোটের ফল প্রকাশের দিনই বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তুহিনা খাতুনের (১৯) দেহ। তুহিনার বাড়ি যেখানে, সেই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে ভোটে জেতেন শেখ বসিরুদ্দিন ওরফে বাদশা, যিনি এলাকায় দাগী তোলাবাজ হিসেবে পরিচিত।
তুহিনার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটে জেতার পরই এলাকায় বোমাবাজি শুরু করেন বাদশা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসাতে থাকেন। তুহিনার বাড়িতেও যান বাদশা। সেই সময় বাড়িতে তুহিনা ও তাঁর দুই বোন ছাড়া কেউ ছিল না। এর কিছুক্ষণ পরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তুহিনার।
জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই তুহিনা ও তাঁর দুই বোনকে উত্তক্ত করতেন বাদশা। ভোটে জিতলেই ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছিল তুহিনাকে। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তুহিনার বাড়ির পাশে একটি দেওয়ালে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তিন মেয়ের একটি কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন বাদশার অনুগামীরা।
যদিও ওই ছবি মুছে দেওয়ার কোনও তাগিদ রাজ্য নির্বাচন কমিশন বা পুলিশ-কারওর পক্ষ থেকেই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাই ওই ছবি এলাকায় দেওয়ালেই রয়ে যায়। ছবির কথাই ফলে যায় ২ মার্চ। ঘটনাটি ঘটে বর্ধমানের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লি এলাকায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন