বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পার। সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। এরই মাঝে সিবিআই-র বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লালনের স্ত্রী এবং পরিবার। একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে সিবিআই-র বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি।
রামপুরহাট থানায় বেশ কয়েকজন সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি। রেশমার স্পষ্ট অভিযোগ, লালনকে খুন করেছে সিবিআই। শুধু তাই নয়, তার জিভ কেটে নেওয়া হয়েছে! সোমবার একদল সিবিআই আধিকারিক তাঁর বাপের বাড়ি গিয়ে ভাঙচুর করেন। হার্ড ডিস্ক না দিলে ৫০ লক্ষ টাকার ঘুষ দিতে বলেন তাঁরা। আমি সিবিআই অফিসারদের জানাই এত টাকা এখন আমার কাছে নেই। প্রত্যুত্তরে তারা বলেন, ১২টার পর দেখ কী অবস্থা করি। এরপরই সোমবার বেলার দিকে লালনের মৃত্যু সংবাদ আসে।
মঙ্গলবার রামপুরহাট মেডিকেল কলেজে লালনের মরদেহ দেখতে যান রেশমা। সাথে ছিলেন লালনের ভাগ্নী। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পথে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। সেই সময় লালনের ভাগ্নীই প্রথম জানান, আমরা সিআইডি তদন্ত চাইছি। সিবিআই মেরে ফেলেছে ওকে। সারা দেহে নীল নীল দাগ। পা ও হাতের তলায় মারের চিহ্ন স্পষ্ট। ওর জিভ কেটে দিয়েছে।
এরপর রেশমা বলেন, আমরা ওই সিবিআই অফিসারদের গ্রেফতারি চাই। সিআইডি তদন্ত চাইছি। ওর জিভ কেটে দিয়েছে। আমরা ওই দেহ নেব না। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দিয়েছি। এফআইআরে আমি ওদের নাম দিয়েছি।
এফআইআর-এ লালনের স্ত্রী আরও জানান, গত ৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে (লালন) গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপরই তার মুখ দিয়ে 'বড় বড় নাম' বলিয়ে নিতে চান তাঁরা। এই সবকিছুই তিনি জানতে পেরেছিলেন স্বামীর থেকে। পরে রামপুরহাট আদালতের নির্দেশে লালনকে দ্বিতীয় বার হেফাজতে নেওয়া হয়। তারপর ক্রমাগত 'হার্ড ডিস্ক' দেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়।
রেশমার আরও অভিযোগ - গত রবিবার রাতে তাঁকে এক সিবিআই আধিকারিক হুমকির সুরে বলেন, সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে আমাকে হার্ড ডিস্ক দিবি। নাহলে সোমবারের পর তোর স্বামীকে আর পাবি না। এই অবস্থায় তাঁরা পুলিশকে গিয়ে বলেন, কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। এরপর ফের এক সিবিআই আধিকারিক ফোন করেন রেশমাকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন