ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহেরের বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকালে হানা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
গত ২৫ শে জুলাই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই তদন্তে অসহযোগিতা করার অভিযোগে আবু তাহের সহ তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল মহকুমা আদালত। বাকি অভিযুক্তরা হলেন শেখ খুশনবি এবং শেখ আমানুল্লা। এদের সকলের বিরুদ্ধেই ভোট পরবর্তী হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
২১-র বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে নন্দীগ্রামের চিল্লাগ্রামের বাসিন্দা বিজেপি নেতা দেবব্রত মাইতিকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে আবু তাহের সহ তিনজনের বিরুদ্ধে। অথচ বারবার সিবিআই তলব করলেও হাজিরা এড়িয়ে গেছে অভিযুক্তরা। এ প্রসঙ্গে আবু তাহেরের বক্তব্য, সিবিআই-এর তরফে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল তাতে হাজিরা দেওয়ার কোনও কারণ বিশদে উল্লেখ করা ছিল না। সেই কারণেই তিনি সিবিআই-এর কাছে যাননি।
এর পাশাপাশি তাহের আরও জানান, "জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে এর আগে একাধিক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে বিনা বিচারে জেলে রয়েছেন তাঁরা। আমি দেবব্রত মাইতিকে চিনিই না। আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।"
সূত্রের খবর, সোমবার সকালে আবু তাহের সহ তিনজনকে ফের তলব করা হলেও হাজিরা এড়িয়ে গেছেন তাঁরা। পরবর্তীকালে তাহের সিবিআই-কে মেইল করে জানিয়েছেন, তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বেশিরভাগ সময়ই তিনি ব্যস্ত থাকেন। তাই তাঁকে যেন বারবার হাজিরা দিতে না বলে টেলিফোন মারফত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের সিপিআই(এম) নেতা মহাদেব ভুঁইয়া পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, "আবু তাহেরের মত নন্দীগ্রামে অনেক নেতা আছে। কিছুদিন আগে নন্দীগ্রামে তাদের নেতা ছিল শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নেতৃত্বে প্রত্যেকটা নির্বাচন হয়েছে। শুধু ভোট পরবর্তী সময় নয়, ভোটের আগে-পরে সবসময় এমনকি ২০০৭ সালের পর থেকে হিংসা, হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি চলত। সেখান থেকেই এখন টনক নড়েছে। সেই জায়গায় যে শাস্তি হওয়ার দরকার আইনের দিক থেকে শাস্তি হওয়া উচিত।"
তৃণমূল এবং বিজেপিকে যৌথ আক্রমণের সুরে মহাদেব বাবু জানিয়েছেন, "ওরা অনেক মানুষের ক্ষতি করেছে, অনেক মানুষের উপর আক্রমণ করেছে। তৃণমূল এবং বিজেপি দুটো দলই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে। শুধু আবু তাহের নয়, মেঘনাদ পাল, শুভেন্দু অধিকারী এরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরী করেছে। শুধু লুটে খাও, বেচে দাও এইসব ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এদের সংসার, জীবন-যাপন, রাজনৈতিক জীবন পরিচালিত হয়।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন