মঙ্গলবারও কয়লা পাচার মামলার চূড়ান্ত চার্জ গঠন হল না। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ভর্ৎসনা করল আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালত। আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে সিবিআইকে চূড়ান্ত চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, চার্জ গঠনের দিন এই মামলায় সব অভিযুক্তকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালতে ছিল কয়লা পাচার মামলার শুনানি। এদিন নির্ধারিত সময়ে আদালত চত্বরে উপস্থিত হন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক উমেশকুমার সিংহ। হাজির হন বেশ কয়েক জন অভিযুক্তের আইনজীবীও। চূড়ান্ত চার্জ গঠনের কথা ছিল আজ। কিন্তু কিছু কারণের জন্য চার্জ গঠন হল না।
এদিন আদালতে সিবিআই জানায়, এই মামলায় আরও কয়েকজন অভিযুক্তের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তারা একটি অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে জমা দেবে। তার জন্য কিছুটা সময় দরকার। কিন্তু অতিরিক্ত চার্জশিট কেন, সেটা জমা দিতেই বা এত দেরি কেন? বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। আগামী ৩ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিনই চূড়ান্ত চার্জ গঠনের নির্দেশ আদালতের।
উল্লেখ্য, এই মামলায় ইতিমধ্যেই দুটি চার্জশিট জমা দিয়েছে আদালত। সেই দুটি চার্জশিট মিলিয়ে মোট ৪৩ জনের নাম রয়েছে। মঙ্গলবার সব অভিযুক্তরা হাজির থাকলেও দুজন হাজিরা দিতে পারেনি শুনানি চলাকালীন। তারা হলেন অভিযুক্ত জয়দেব মণ্ডল এবং নারায়ণ নন্দা। নারায়ণের আইনজীবী জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি তিনি। তবে বিশেষ প্রয়োজনে গাড়ি করে নিয়ে আসা সম্ভব।
উল্লেখ্য, কয়লা পাচার কাণ্ডে গত মঙ্গলবার বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এই মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা। তবে সেদিনই তাঁকে শর্তসাপেক্ষ জামিন দেয় আদালত। অন্যদিকে, এই মামলার আর এক অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র এখনও পলাতক। মঙ্গলবার আদালতে বিনয়ের ভাই বিকাশ মিশ্র উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। অভিযোগ ওঠে, রেলের সাইডিং থেকে বেআইনি ভাবে কয়লা চুরি করে পাচার করা হচ্ছে। এই মামলার তদন্তে নেমে লালার বাড়ি-অফিসে তল্লাশি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। লালার সঙ্গী বলে পরিচিত গুরুপদ মাজি-সহ চার জন গ্রেফতার হন। তিন জন জামিন পেলেও গুরুপদ এখনও দিল্লির তিহার জেলে বন্দি।
সিবিআই সূত্রে খবর, কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত এনামুলের সহযোগিতায় উত্তরবঙ্গ সহ প্রতিবেশি রাজ্যগুলিতে কয়লা পাচার চলত। এই কাজে লালা রাজনৈতিক সহয়তা পেতেন বলেই জানা গেছে সিবিআই সূত্রে। পাশাপাশি, লালার সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড, রেলকর্তাদের একাংশেরও যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করে সিবিআই।
অন্যদিকে, কয়লা পাচার কাণ্ডে ইতিমধ্যেই সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জীকেও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন