মেলা নয়, বরং জোর দিতে হবে ১০০ দিনের কাজে! হ্যাঁ, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বুধবার রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে এমনই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন কোনও প্রকল্প গ্রহণ করা তো যাবেই না, এর পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে হওয়া বিভিন্ন মেলার খরচে হ্রাস টানার কথা জানিয়ে দিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো।
নবান্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, বুধবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশগুলি দিয়েছেন :-
১) CMO-র নির্দেশ ছাড়া এখন থেকে কোনও দপ্তর কোনও প্রকল্প চালু করতে পারবে না।
২) শ্রম মেলায় বরাদ্দ বাজেট থেকে ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের বেতন প্রদান। পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের রাজ্য সরকারের পূর্ত, সেচ সহ বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ।
৩) যে সমস্ত কৃষি জমির ওপর দিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইনের তার যাবে, সেইসব জমির বাজারমূল্যের ১৫০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জমির মালিককে। পাশাপাশি, ক্ষতিপূরণ বাবদ ফসলের দামের ১০ শতাংশ দেওয়া হবে।
৪) এতদিন রাজ্যের যেসব মহিলারা বিধবা ভাতা পেতেন তাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় ছিলেন না। বুধবারের মন্ত্রীসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে বিধবা ভাতাভোগী মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন।
৫) দুয়ারের সরকারের পাশাপাশি অন্য কোনও প্রকল্পের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে, তাও জানাতে পারবেন আম জনতা।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত? রাজ্য প্রশাসনের দাবি, বিগত প্রায় ১ বছর ধরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রের মোদী সরকার। কবে সেই বরাদ্দ পুনরায় চালু হবে, তা নির্দিষ্টভাবে জানা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় রাজ্যের অধীনে থাকা বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ডধারীদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে রাজ্যকে। সেখানে খরচ হয়েছে ৬০০ কোটির বেশি টাকা।
তবে পাল্টা কেন্দ্রের দাবি, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প অনুযায়ী খরচের সঠিক হিসেব দিতে পারছে না তৃণমূল সরকার। যার জেরে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত অব্যাহত।
অন্যদিকে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই রাজ্য মন্ত্রীসভার একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, খেলা-মেলা কম করে ১০০ দিনের কাজে জোর দিতে হবে, এটা তো ভালো ব্যাপার। কিন্তু অনেক টাকা তো লুঠ হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। সেগুলো ফেরানোর দাবিতে সাধারণ মানুষ ঝান্ডা নিয়ে পথে নেমেছে। তার বিচার হওয়া তো দরকার!
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন