চোপড়া কাণ্ডের আবহে প্রকাশ্যে এল পঞ্চায়েত ভোটের সময় মিছিলে গুলি চালানোর ঘটনা। ওই ঘটনায় এক বাম নেতার মৃত্যুও হয়। সেই ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছিল তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবি, যাকে চোপড়া কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে। চোপড়া কাণ্ডে তাজিমুলকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রবিবার দুপুরে চোপড়ার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দেখা যায় চোপড়ার স্থানীয় তৃণমূল নেতা তাজমূল ওরফে 'জেসিবি' এক ছড়া কঞ্চি দিয়ে এক তরুণীকে বেধড়ক মারধর করছে। মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে ফের মারধর করা হচ্ছে। মেয়েটির সঙ্গে এক তরুণকেও মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)
এরপর রবিবার সন্ধ্যাতেই তাজিমুলের বিরুদ্ধে দুটি জামিন অযোগ্যধারা এবং তিনটি জামিনযোগ্য ধারাতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে চোপড়া থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, তাজিমুলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৩৫৪ ধারায় খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। জামিন অযোগ্য ধারা ৩০৭ ধারায় মহিলার শ্লীলতাহানি এবং তাঁর উপর বলপ্রয়োগের অভিযোগও দায়ের হয়েছে। যার সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের কারাদণ্ড। এ ছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধির জামিন যোগ্য ধারা ৩২৩, ৩২৫ এবং ৩৪ ধারাতেও মামলা হয়েছে জেসিবির বিরুদ্ধে।
সোমবার তাকে ইসলামপুর থানায় পেশ করে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে দশদিনের জেল হেফাজতের আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত পাঁচদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পাঁচদিন পরে ফের তাজিমুলকে আদালতে পেশ করা হবে।
এই আবহে সামনে এসেছে পঞ্চায়েত ভোটের সময় ঘটা এক ঘটনা। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের শেষ দিনে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরা। সেই মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাম-কংগ্রেসের দাবি ছিল, ওই ঘটনাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মনসুর নইমুল নামে এক সিপিআইএম কর্মী।
এরপর সিপিআইএমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গুলি ছোড়ার পিছনে মূল অভিযুক্ত ছিলেন তাজিমুল ইসলাম। সেই ঘটনায় তাকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু পনেরো দিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি। বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শাসক দলের নেতা হওয়ায় বারবার ছাড়া পেয়ে যান তাজিমুল। এমনকি, তাজিমুলের গ্রেফতারির ঘটনা স্বীকার করে নেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল।
এর আগেও তাজিমুল এভাবে সালিশি সভা ডেকে নিজেই দোষী নির্বাচন করে ‘শাস্তি’ দিয়েছেন অনেককে বলে জানা যাচ্ছে এখন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন