গ্রেফতার হওয়া ছাত্রযুবদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিল পাঁচলা থানার সিভিক পুলিশরাই। ওদের হাত থেকে রেহাই পাননি ষাটোর্ধ্বরাও। ভোট লুট, তোলাবাজি, বিরোধীদের হামলা - সবেতেই যেন এগিয়ে দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদেরই। আমতা থানার পুলিশের পাশাপাশি মূলত অপারেশন চালানো হয় সিভিকদের দিয়েই। এমনই অভিযোগ বামেদের।
প্রসঙ্গত, ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত প্রীতম ভট্টাচার্যকে। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, থানার ওসির অর্ডারেই তারা ওইদিন রাতে আনিসের বাড়িতে যান।
পুলিশ সুপারের অফিসে বিক্ষোভের ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে শনিবার রাতে শুধু মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে আলাদা ঘরে রাখা হয়। বাকি সবাইকে একত্রে রেখে পোশাক খুলে সিভিকরাই তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আদালতও থানার সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। যদিও রাজ্য মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেনি।
গত শনিবার আনিস খান হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় এসএফআই-ডিওয়াইএফআই। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে,টিয়ার গ্যাস, শেল ফাটায়। একশোরও বেশি ছাত্র-যুব জখম হন। ৪০ জন ছাত্র-যুব সংগঠক, প্রাক্তন যুব আন্দোলনের কর্মীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
বামেদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকাও একাধিক জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা অর্থাৎ আইপিসি ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেদিন মোট আটজনকে থানায় নিয়ে আসা হয় গ্রেফতার করে। তারপর সিভিকদের দিয়েই চলে অত্যাচার। আর্তনাদ লকআপের বাইরে থেকে শোনা যায় বলে অভিযোগ।
আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ একজন বাদে সকলেই অধরা। অভিযুক্তদের অধিকাংশ সিভিক পুলিশ। সিটের তদন্তে এমনই তথ্য মিলেছে। কয়েক দফায় ভবনী ভবনে তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দু'দফার জেরার মুখে পড়েছেন আমতা থানার সেসময়কার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী। জেরা করা হয়েছে এএসআই নির্মল দাসকে। তিনি ওইদিন সারদা গ্রামে ছিলেন বলে জানতে পেরেছে সিট।
কিন্তু ঘটনার ১১ দিন পরও পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি নতুন করে। টিআই প্যারেডে আনিসের বাবা সালিম খান দুই পুলিশকর্মীকে চিনতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের দুই বিধায়ক সুকান্ত পাল, নির্মল মাঝি তৎপর হয়েছেন। তৃণমূল সিভিক ভলান্টিয়ারদের বাঁচাতে ময়দানে নেমেছে বলেও অভিযোগ বামেদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন