'মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো করেই জানেন, তাঁর সচেতন অনুমতিতেই রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে।' শুক্রবার বর্ধমানে আয়োজিত ABTA (All Bengal Teachers Association)-র প্রকাশ্য সমাবেশের সভা থেকে এমনটাই জানালেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির দশম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বর্ধমানে। সেই উপলক্ষ্যে শুক্রবার পারবীরহাটা পার্বতী মাঠে একটি প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের দাবি, কার্জন গেটের সামনে সভা করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে পারবীরহাটার মাঠেই সমাবেশের আয়োজন করতে হয়। যার ফলে রাস্তা পর্যন্ত শিক্ষকদের ভীড় উপচে এসে পড়ে।
এদিন সম্মেলন উপলক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য মিছিল শুরু হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, ABTA-র রাজ্য সম্পাদক সুকুমার পাইন এবং সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য।
সমাবেশ থেকে রাজ্যের শাসক দলের একাধিক দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরে বিকাশ বাবু বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির সাথে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এত বড় দুর্নীতির কথা উনি জানেন না, এটা ভাবা মূর্খামি। বিনা বাধায় তদন্ত হলে, অপরাধের আওতায় ওনার নাম অবশ্যই আসবে। যারা অপরাধী, তাদের সবাইকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
কার্জন গেটে সভা করার ক্ষেত্রে পুলিশি অনুমতি না মেলা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) সাংসদ জানান, শান্তিপূ্র্ণ মিছিল এবং জমায়েতের জন্য পুলিশের অনুমতি নিষ্প্রয়োজন। পুলিশকে অনুমতি দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে? আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে সভা করার অনুমতি চাইলে, সেই সভা পরিচালনায় আপনাদের সহযোগিতা করা পুলিশেরই দায়িত্ব।
রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, তৃণমূল বহু জায়গায় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে হামলা চালাচ্ছে। অনেক জায়গার শিক্ষকদের আমি বলেছি, লকডাউনের সময় সরকার স্কুল ছুটি দিলেও আপনারা কেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াচ্ছেন না? তাঁরা আমাকে বলেছেন, বাড়ি গিয়ে পড়াতে গেলে হামলা করে তৃণমূল কর্মীরা। তাদের দাবি, সরকার স্কুল ছুটি দিলে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো যাবে না। অর্থাৎ, তৃণমূলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই হলো রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা।
তিনি আরও বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গরীব মেধাবী পড়ুয়ারা যাতে সমান লেখাপড়ার সুযোগ পায় সেইজন্য স্কুলে বেতন মুকুব করা হয়েছিল। বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার হাতে হাত মিলিয়ে শিক্ষাকে বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রামের বহু স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে, ভবিষ্যতে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে কিনা তা অনিশ্চিত। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ছুটি দিয়ে মানুষের মনে শিক্ষা নিয়ে অনাস্থা তৈরী করছে তৃণমূল সরকার।
লালন শেখের মৃত্যু প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) নেতার দাবি, লালনের মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে অনুব্রত এবং তৃণমূল। এটা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক, যাদের বিরুদ্ধে লালনের স্ত্রী অভিযোগ জানিয়েছেন তারা সকলেই বগটুই এবং অনুব্রতর তদন্তের সাথে যুক্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন