মাত্র ৯ মাস আগেই পুরবোর্ড গঠন হয়েছে, মেয়াদ শেষ হতে এখনও বিস্তর দেরি। এরই মাঝে খড়গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলেরই ২০ জন কাউন্সিলর। পুরপ্রধানের নাম প্রদীপ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন কাউন্সিলররা। এই মর্মে দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি লিখেছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, প্রদীপের কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করে গত বুধবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা এবং বৃহস্পতিবার জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির সঙ্গে দেখা করেন কাউন্সিলররা। তাঁদের যাবতীয় সমস্যার কথা জানান।
প্রদীপের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অভিযোগ, সিআইসিদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁদের কোনও গুরুত্বই নেই। কোনও পরামর্শ ছাড়া কাজ করে চলেছেন তিনি। উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খান জানান, রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। এটা দলীয় ব্যাপার, তাই যাবতীয় সিদ্ধান্ত দলই নেবে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিতা পাণ্ডের কথায়, ওঁর (পুরপ্রধান) কাজে আমরা কেউই খুশি নই।
২০১৫ সালে পুরভোটে জয়ী হয়ে প্রথম বার পুরপ্রধান হন প্রদীপ সরকার। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তিনি খড়গপুর পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৯-র বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরও তিনি এই পদে ছিলেন। তবে, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হন। তারপরেও খড়গপুর পুরসভার প্রশাসক হিসাবে কাজ চালিয়ে গেছেন প্রদীপ।
অন্যদিকে, কাউন্সিলরদের ক্ষোভের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় গত বৃহস্পতিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন প্রদীপ।
তাঁর দাবি, এপ্রিল থেকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সঠিক ভাবেই দায়িত্ব পালন করছি। সমস্যা সমাধানের কাজ ছাড়াও বিরোধী দলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি তাঁর নির্দেশ মেনেই দায়িত্ব পালন করছি। আমার প্রতি অনাস্থা আনা মানে মমতাকে অসম্মান করা। তবুও, এত জন কাউন্সিলর যখন আমার বিপক্ষে, তাহলে আমি পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যাব। কিন্তু, মমতা ব্যানার্জী বা অভিষেক ব্যানার্জী নির্দেশ দিলে তবেই।
এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, খড়গপুর পুরসভায় একটা সমস্যা চলছে। সেটা দলকে জানিয়েছেন কাউন্সিলাররা। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁরা যে নির্দেশ দেবেন, সেটা কাউন্সিলর বা পুরপ্রধানকে জানিয়ে দেওয়া হবে। যদিও শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন প্রদীপ সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন