প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার দুর্নীতিতে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। এরই মাঝে পাট্টাদারদের জমির ধান লুট করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে, এবার রীতিমতো লড়াই করে প্রাক্তন জোতদার তথা তৃণমূল নেতার উঠোন থেকে নিজেদের জমির ধান উদ্ধার করলেন কৃষকরা।
গত রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাইয়ের মাংরুল গ্রামে। সেখানকার ৫২ জন কৃষকের অভিযোগ, তাঁদের প্রত্যেকের ৪ বিঘা জমিতে কষ্ট করে ফলানো ধান লুট করে নিয়ে যায় পুরনো জোতদারদের পরিবারের সদস্যরা। সেখানকার ১৫ বিঘা জমিতে চাষ করেন ৫২ জন। শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে কৃষকদের জমিতে ট্রাক্টর চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
যেসব তৃণমূল নেতাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন - অনিল মাউর, দুলাল মাউর, তপন মাউর, মুরারি মাউর। অতীতেও মাংরুল ব্লকের এই তিনটি জায়গায় পাট্টাদাররা লড়াই করে তাঁদের নিজেদের জমি উদ্ধার করেছেন বলেই জানা গেছে।
ধান লুটের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছান কৃষকসভার নেতৃত্ব। পাট্টাদার উত্তম দাস, জোটে কুশারি, তরুণ দাস, নবকুমার দাস, সুফল দাস, মান্নান আলি, দুখীরাম মিদ্যাদের দাবি - তাঁরা আগে থেকেই জানতেন, রাতের অন্ধকারে কারা জমিতে ট্রাক্টর চালিয়েছে এবং কারা কারা জমির ধান লুট করেছে।
বুধবার ৫২ জন কৃষক একত্রিত হয়ে কৃষক সভার ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করে তৃণমূল নেতার বাড়ির উঠোনে পৌঁছান। তাঁদের একটাই দাবি, অবিলম্বে মজুত রাখা ধান ফেরত দিতে হবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কৃষকদের ভীড় দেখে ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব। কার্যত চাপের মুখে পড়ে কৃষকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান মাউর পরিবার। তাদের দাবি, রাগের মাথায় এমন কাজ করে ফেলেছে।
এই ঘটনার পর কৃষকরা মজুত করা ধান নিজেদের উঠোনে নিয়ে আসেন। নিজেদের জমিতে লাল ঝান্ডা পুঁতে দেন। বৃহস্পতিবার সেই জমিতে আলু চাষ শুরু হবে বলে জানা গেছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, ব্লক নেতাদের এবং পুলিশকে ফোন করে কোনও সাহায্য মেলেনি। কৃষকদের এই হার না মানা লড়াইকে কুর্নিশ জানান কৃষকসভার জেলা সম্পাদক মেঘনাদ ভুইয়া, সিপিআই(এম) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন