‘জেল কে তালে কাচ্চে থে, হামারে কমরেড সাচ্চে থে’। মঙ্গলবার বালুরঘাটের জনসভায় এভাবেই আভাস রায়চৌধুরীদের জামিনের খবর জানালেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে ‘রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং বিজেপি সরকারের মানুষ মারা সর্বনাশা নীতির বিরুদ্ধে’ জেলাশাসকের-এর কাছে ডেপুটেশন দেয় সিপিআইএম।
এদিন ডেপুটেশন দেবার আগে এক বিক্ষোভ সভায় মহম্মদ সেলিম বলেন, এই যে আমরা বলছি চোর ধরো জেল ভরো – এটা কেন বলছি আমরা? আসলে চোর ধরা যাদের কাজ তাঁরা সেই কাজ করছে না। সব পুলিশকে বলছি না। পুলিশের মধ্যে রকমফের আছে। আমাদের রাজ্যের পুলিশ তাদের কাজ করল না বলে বাইরে থেকে ইডি সিবিআই আনতে হল।
এদিন মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, একদিকে মোদীর লুট আর একদিকে দিদির লুট। লুটেরাদের পোয়াবারো। দিদির ঝান্ডা ধরে লুট করলে পুলিশ পাহারা দেবে আর বেড়া টপকে বিজেপির ঝান্ডা ধরলে তাকে কেন্দ্রীয় পুলিশ পাহারা দেবে। আমরা কোনো আইন ভাঙ্গিনি। কিন্তু যাদের আইন রক্ষা করার কথা তারাই আইন ভেঙেছে। এই মঞ্চের সামনে নাকি ১৪৪ ধারা আছে। পুলিশ দড়ি টাঙিয়েছিল। মানুষ সেই দড়ি সরিয়ে দিয়েছে। এইসব নকল পুলিশ পাহারা দিয়ে কোনো লাভ নেই। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির প্রাসাদের সামনেও পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। মানুষের মেজাজ বুঝতে পারছেন না। যেটা করার কথা ছিল সেটা করেননি। স্বীকার করুন। লজ্জা থাকলে ক্ষমা চান।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, আমরা যখন হিসেব চাইতে আসছি তখন সামনে পুলিশকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। হিসেব কে দেবে? আমরা পুলিশের কাছ থেকে হিসেব চাইছি না। আমরা তৃণমূলের কাছে চুরি জোচ্চুরির হিসেব চাইছি।
মহামারী প্রসঙ্গ টেনে এনে এদিন সেলিম বলেন, মহামারীর সময় আমরা দেখেছি মানুষ হাসপাতাল পায়নি, অক্সিজেন পায়নি, চিকিতসা পায়নি। শ্মশান পায়নি, কবরস্থান পায়নি। তখন আয়ুষ্মান ভারত কোথায় ছিল? মমতা করলো স্বাস্থ্যসাথী। আর যখন মহামারী হল তখন স্বাস্থ্যসাথী খুঁজে পাওয়া গেল না। তখন সাথী কে ছিল? রেড ভলান্টিয়ারস। তারা ছুটে বেড়িয়েছে।
বিজেপি এবং তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ করে সেলিম বলেন, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে দিদি লড়বে না, দিদি সরকারের বিরুদ্ধে মোদী লড়বে না। যে সময় বিশ্বজুড়ে, দেশজুড়ে বেকারি বেড়ে গেল, পৃথিবীর মধ্যে আমাদের দেশে সবথেকে বেশি গরিব মানুষ বেড়ে গেল, অন্নহীন মানুষ বেড়ে গেল, আর সেই সময় খাদ্যদ্রব্যে জিএসটি লাগিয়ে দিল। আপনি যখন জিএসটি দেন ৯% দিদি আর ৯% মোদী। মোদী দিদি আলাদা?
তিনি আর বলেন, মানুষ টাকা জোগাড় করছে ঘর বানানোর জন্য। আর তৃণমূল ঘর জোগাড় করছে টাকা রাখার জন্যে। এটাই হচ্ছে পার্থক্য। এটাই বিরোধ। এই বিরোধ তুলে ধরতে হবে। এ লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি লড়বে না। এই লড়াই আমাদের লড়তে হবে। আমরা গরিব মানুষের হকের টাকা ফেরত চাই। যে কোনো মূল্যে আমরা তা আদায় করব। লড়াইয়ের ময়দান, রাস্তা সব আমাদের। সংসদে যদি বিচার না হয়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচার হবে। কিন্তু বিচার আমাদের পেতেই হবে। মুখ বন্ধ রাখার জন্য লালঝান্ডা জন্মায়নি। অনেক সহ্য করেছি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন