বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী এবার নতুন মুখ। পরিবারগত ভাবে তাঁর অন্য পরিচয়ও আছে। কিন্তু রাজনৈতিক ময়দানে প্রার্থী হিসাবে তিনি নতুন। কর্পোরেট জগতের চাকরি ছেড়ে এবার ভোট ময়দানে নেমে পড়লেন সায়রা শাহ হালিম। বুধবার দুপুরে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে নাম ঘোষণার পরে সন্ধ্যাতেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তিনি। যদিও অতীতে স্বামীর হয়ে ভোটের প্রচার করেছেন। কিন্তু এবার নিজে প্রার্থী। ফলে প্রচার পর্বটা ‘ভীষণ চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে হচ্ছে তাঁর।
জন্মসূত্রে সায়রা কলকাতার। কিন্তু পড়াশোনা করেছেন, বড় হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে। তার অন্য পরিচয় হল তিনি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের ভাইঝি। বাবা জমিরুদ্দিন শাহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল। সৈনিক বাবার মেয়ে হিসেবে গোটা ছোটবেলাটাই কেটেছে দেশের নানা প্রান্তে। প্রসঙ্গত, সায়রা রাজ্য বিধানসভার প্রয়াত প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ।
একেবারে ছেলেবেলাটা কেটেছে কলকাতার রেস কোর্সের কাছে সেনা কোয়ার্টারে। এরপরে সায়রাকে ভর্তি করা হয় উটির লরেন্স স্কুলে। সেখান থেকে সায়রার বাবাকে চলে যেতে হয় ভারতীয় কূটনীতিক হিসেবে সৌদি আরবে। ফলে সায়রা একাদশ ও দ্বাদশ কাটে রিয়াধে। তারপর কলেজ আবার রাজস্থানের অজমেরে। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সায়রা ফের কলকাতায় ফেরেন বিবাহসূত্রে।
২০০০ সালে সিপিআই(এম) নেতা ফুয়াদ হালিমকে বিয়ে করেন সায়রা। তবে তখন তিনি রাজনীতিতে যোগ দেননি। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে স্বামী ফুয়াদ বালিগঞ্জে প্রার্থী হন। তাঁর সঙ্গে প্রচারে শামিল হন তিনি। ২০১৬ সালে সিপিএমের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের প্রার্থী কৃষ্ণা দেবনাথের হয়েও প্রচার করেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন ফুয়াদ। প্রচারের বড় অংশের দায়িত্বই ছিল সায়রার কাঁধে।
তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ই তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ মানছেন সায়রা। বুধবার তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে থাকলেও নির্বাচনের ময়দানে নতুন মুখ। কিন্তু আমি মনে করি, আমার উপরে মানুষ আস্থা রাখবেন। যাঁরা বারবার দলবদল করেন, ভোটারদের ছেড়ে যান, তাঁদের বদলে মানুষ আমাকেই আশীর্বাদ করবেন।’
পারিবারিক পরিচয় নিয়েও গর্বিত সায়রা। তিনি বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে, খুবই বড় পরিবারে জন্মেছি। আমার বাবা আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। কাকা অভিনয়ের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন।’ স্ত্রী প্রার্থী হওয়ায় খুশি ফুয়াদও। বলেন, ‘এটা দলের মূল্যায়ন। কিন্তু আমিও মনে করি সায়রা যোগ্য প্রার্থী।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন