শুক্রবার রাতে হুগলীর হরিপালে এক স্কুল ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অভিযোগপত্র বা নির্যাতিতার বয়ানে ধর্ষণের উল্লেখ নেই। এরপর থেকে আন্দোলন শুরু করেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার বেলা গড়াতেই স্থানীয় থানায় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এমনকি নির্যাতিতাকে আদালতে গোপন জবানবন্দীর জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও বিক্ষোভ দেখান SFI-DYFI কর্মীরা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে হুগলিতে এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে নাবালিকা এবং তাঁর পরিবারের গোপনীয়তা যাতে ভঙ্গ না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। হুগলি গ্রামীণ পুলিশ জেলার সুপার কামনাশিস সেন অবশ্য আগেই বলেছেন, “সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ দাবি করছেন, এটি ধর্ষণের ঘটনা। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই, অভিযোগপত্র বা নির্যাতিতার বয়ানে ধর্ষণের অভিযোগের কোনও উল্লেখ নেই। শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে।”
আর জেলা পুলিশের এই বক্তব্যের পর থেকেই আন্দোলনে পথে নামেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার বেলা গড়াতেই স্থানীয় থানায় গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বামেদের ছাত্র-যুব এবং মহিলা সংগঠনের সদস্যেরা। পরিস্থিতি সামলাতে থানার গেট বন্ধ রাখতে হয় পুলিশকে। রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে গোপন জবানবন্দির জন্য শনিবার সকালে নির্যাতিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলার এক আদালতে। সেই আদালত চত্বরের সামনে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী-সমর্থকেরা।
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম কর্মী ঐকতান দাশগুপ্ত বলেন, “কিশোরীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। তার নিম্নাঙ্গ বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। ইতিমধ্যে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় এবং পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। যত রাত বাড়তে শুরু করল, পুলিশ সুপার (হুগলি গ্রামীণ) থেকে শুরু করে ডিএসপি, পুলিশের বড় বড় কর্তারা হাসপাতালে পৌঁছান। মেয়েটির মায়ের সঙ্গে সেখানে আলাদা করে কী কথা হয়েছে, তা আমরা বলতে পারব না। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি, মেয়েটির মায়ের বয়ানে কোথাও ধর্ষণ শব্দের উল্লেখ নেই। আমরা জানি না, এর পিছনে কী অজ্ঞাত কারণ রয়েছে। আমাদের কাছে খবর এসেছে, পুলিশ মেয়েটিকে বিভিন্ন ভাবে মন্ত্রণা দিচ্ছে যাতে সে বয়ান বদলায়।”
এবিষয়ে মমতা ব্যানার্জীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। এক বিক্ষোভকারী জানিয়েছেন, “পুলিশ মন্ত্রী হিসাবে মমতা ব্যানার্জী ব্যর্থ। মমতা ব্যানার্জীকে পদত্যাগ করতে হবে। কী কারণে ওনি এই ক্ষমতা ধরে থাকবেন? আমাদের দাবি, মমতা ব্যানার্জীকে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে পদত্যাগ করতে হবে। অভিযুক্তদের যতক্ষণ না পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের এই আন্দোলন চলবে। পুলিশ এই ভাবে ঘটনাটা ধামাচাপা দিতে পারবে না। পুরো ঘটনা সামনে আনতে হবে। যারা দোষী তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন