Cyclone Dana: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’, সাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ, উত্তাল সমুদ্র, সতর্ক নবান্ন

People's Reporter: আলিপুর জানিয়েছে, সোমবার উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। ক্রমে তা আরও ঘনীভূত হবে। বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
Cyclone Dana: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’, সাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ, উত্তাল সমুদ্র, সতর্ক নবান্ন
প্রতীকী ছবি
Published on

ফের ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রূকুটি। ইতিকধ্যেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। তা ক্রমে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে আসতে পারে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ২৩ অক্টোবরব বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপটি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে তা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। উপকূলের কাছে ঘন্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার নাম হবে ‘ডানা’। এই নাম কাতারের দেওয়া। যার অর্থ ‘মুক্ত (Free)’।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সোমবার উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। ক্রমে তা পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে সরে আরও ঘনীভূত হবে। এবং আগামী ২২ অক্টোবর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় আরও শক্তি বাড়িয়ে ২৩ অক্টোবর, বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর সেটি উত্তর-পশ্চিম ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগোবে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে ২০ থেকে ২৩ অক্টোবর আন্দামান এবং সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। বুধবার ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে বৃহস্পতিবার হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ঘন্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এমনকি দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘন্টায় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্তও হতে পারে। সমুদ্র উত্তাল থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

অন্যদিকে, মৎস্যজীবীদের জন্য জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। সোমবার অর্থাৎ ২১ তারিখ সন্ধ্যার মধ্যে মৎস্যজীবীদের নিরাপদে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর গভীর সমুদ্রে অর্থাৎ মধ্য ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এবং ২৬ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধ করেছে হাওয়া অফিস।

আলিপুর জানিয়েছে, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টির কোনও সতর্কতা নেই। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়। এছাড়া, বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামেও। বৃহস্পতিবার অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। এই জেলাগুলিতে বুধবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনাতেও। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের আর কোনও জেলায় আপাতত আবহাওয়া সংক্রান্ত কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি।

নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গেও। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে অন্য কোনও জেলায় আবহাওয়া সংক্রান্ত সতর্কতা নেই।

অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আগাম সতর্ক নবান্ন। ইতিমধ্যেই সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে শুরু হয়েছে মাইকিং। সোমবার সন্ধ্যের মধ্যে মৎস্যজীবীদের নিরাপদে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্বল বাঁধের উপর সেচ দফতরকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সুন্দরবনের বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়‌ কেন্দ্র ও স্কুলগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া ব্লকে ব্লকে শুকনো খাবার, ত্রিপল, পানীয় জলের পাউচ মজুত রাখা হচ্ছে। জেলা, মহকুমা ও ব্লকস্তরে কন্ট্রোলরুম খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লকে মোতায়েন করা হয়েছে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সব বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীদের।  

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in