জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে রাজ্য জুড়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ জনের, রাজ্যের তরফ থেকে এই দাবি করা হয়েছে। নিহতদের পরিবার পিছু দু'লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের দেওয়া নিহতের তালিকায় বালুরঘাটে পথদুর্ঘটনায় মৃত এক শিশুর নামও রয়েছে। কিন্তু শিশুর পরিবার সরকারের দেওয়া সেই দু'লক্ষ টাকা নিতে অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি, চিকিৎসকদের কর্মবিরততি নয়, ডাক্তারের গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের ছেলের।
আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে গত ৯ আগষ্ট থেকে কর্মবিরতি করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ১২ অগস্ট পথদুর্ঘটনায় আহত হয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি হয় তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া শিবম শর্মা। পরে সেখানেই মারা যায় সে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি করানোর কয়েক ঘণ্টা পরেও সেখানে কোনও চিকিৎসক আসেননি। বিনা চিকিৎসায় ওই শিশুর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়।
অন্যদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে রাজ্য জুড়ে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ওই ২৯ জনের পরিবারকে দু'লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ওই তালিকায় রয়েছে শিবমের নাম। তৃণমূলের সমাজ মাধ্যমে শিবমের মৃত্যু নিয়ে পোষ্টও করা হয়। যদিও পরিবারের দাবি, তাঁদের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে মৃত শিবমের দিদি রিঙ্কি শর্মা বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরে মেডিক্যাল কলেজ নেই। জুনিয়র ডাক্তারও নেই। তাই তাঁদের আন্দোলনও এখানে নেই। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে যে প্রচার করা হচ্ছে, তা মিথ্যা। তাই আমরা টাকা চাই না, আমরা বিচার চাই। চিকিৎসকের শাস্তি চাই।”
মৃত শিশুর পিসতুতো দাদা পবিত্র সূত্রধর বলেন, “ঘটনার দিন আমার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর কয়েক ঘণ্টা পরে চিকিৎসক আসেন। চিকিৎসায় দেরির কারণেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই অভিযুক্ত চিকিৎসককে আড়াল করার চেষ্টা চলছে। থানা প্রথমে আমাদের এফআইআর পর্যন্ত নেয়নি।”
শিবমের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে থানা ভাঙচুরও করা হয়। লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় হাসপাতালের সুপার এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কমিটিও তৈরি করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তবে পরিবারের দাবি, সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করা হয়েছে কিনা, তা তাঁদের জানানো হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন